ফাইল চিত্র
শেষ আপডেট: 4 May 2025 11:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: যে কারণ দেখিয়ে বরখাস্ত করেছে সিআরপিএফ, তা ভিত্তিহীন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা জবাব মুনির আহমেদের। সিআরপিএফ-এর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যাওয়ার নিচ্ছেন প্রস্তুতি।
পাকিস্তানের তরুণীকে বিয়ে করার ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তাঁকে এদেশে রাখার অভিযোগে সিআরপিএফ জম্মুর বাসিন্দা মুনিরকে বরখাস্ত করেছে। চাকরি থেকে বরখাস্ত সংক্রান্ত সমস্ত কাগজপত্র কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু ফোনে বা অন্য কোনও ভাবে তাঁকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেউ জানাননি। গোটা বিষয়টি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যম থেকে তিনি জানতে পারেন।
মুনিরের কথায়, পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ের আগে তিনি বিষয়টি নিয়ে সিআরপিএফ-কে জানিয়েছিলেন। অনুমতি নিয়েই নাকি তাঁদের বিয়ে হয়েছে। বলেন, 'আমি প্রথমে মিডিয়ার মাধ্যমে বরখাস্তের খবরটা জানতে পারি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সিআরপিএফের কাছ থেকে একটি চিঠি পাই, যাতে বরখাস্তের কথা জানানো হয়। এটা আমার এবং আমার পরিবারের কাছে একটা বিরাট ধাক্কা, কারণ আমি বিয়ের আগে সদর দফরত থেকে অনুমতি নিয়েছিলাম।'
আহমেদ তাঁর পাকিস্তানি স্ত্রীর বিষয়ে তথ্য গোপন করেন এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তাঁকে ভারতে থাকতে সাহায্য করেন। বাহিনীর মতে, এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকির। এই দাবি নস্যাৎ করেছেন জম্মুর ঘারোটা এলাকার বাসিন্দা ওই জওয়ান। তাঁর দাবি, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে সিআরপিএফ-এ যোগ দেন তিনি। পরে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাসিন্দা মিনাল খান-এর সঙ্গে অনলাইনে পরিচয় হয়। ২৪ মে ২০২৪-এ ভিডিও কল মারফত নিকাহ সম্পন্ন হয়। বিয়ের প্রায় এক মাস আগে অর্থাৎ ৩০ এপ্রিল ২০২৪-এ তিনি সদর দফতর আনুষ্ঠানিক অনুমতি পান।
তিনি আরও বলেন, ' ৩১ ডিসেম্বর ২০২২-এ প্রথম মিনাল সম্পর্কে সিআরপিএফ কর্তৃপক্ষকে জানাই। তখনই বিয়ের কথাও ওঠে। এরপর আমি নিজে, আমার বাবা-মা, স্থানীয় পঞ্চায়ত প্রধান এবং জেলা উন্নয়ন পরিষদ সদস্যের হলফনামা-সহ সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করি।'
বিয়ের পর আহমেদ ৭২ নম্বর ব্যাটালিয়নে নিকাহর ছবি, নথি এবং বিবাহের শংসাপত্র জমা দেন। সেসময় তাঁকে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, নো অবজেকশন সার্টিফিকেট-এর কোনও ব্যবস্থা নেই, কিন্তু নিয়ম মেনে সমস্ত নথি জমা দেওয়ায় এক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।
মিনাল খান ভারতীয় ভিসায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ওয়াঘা-অটারি সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেন। মেয়াদ ছিল ২২ মার্চ পর্যন্ত। তবে, মার্চ মাসেই মিনাল এবং আহমেদ দীর্ঘমেয়াদি ভিসার জন্য আবেদন করেন এবং তার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। ছুটি শেষে ফেরার পর ২৫ মার্চ আহমেদকে সুন্দরবনি ব্যাটেলিয়ন সদর দফতরে রিপোর্ট করতে বলা হয়। কিন্তু মাত্র দুই দিনের মধ্যেই তাঁকে ৪১ নম্বর ব্যাটেলিয়নে বদলি করে পাঠানো হয়, ন্যূনতম সময়টুকু না দিয়েই।
এনিয়ে তিনি বলেন, '২৯ মার্চ আমাকে সেখানে যোগ দিতে হয়। সেখানে অধিনায়ক এবং ডেপুটি অধিনায়কের সামনে ইন্টারভিউ দিই এবং সমস্ত নথিপত্রে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করি যে আমি একজন পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করেছি। এমনকি ব্যাটেলিয়নের তথ্য রেকর্ড বইতেও আপডেট করি।'
সবশেষে আহমেদ জানিয়ে দেন, এই বরখাস্ত একেবারেই অন্যায্য। তিনি আইনি পথে ন্যায়বিচারের আশায় আদালতের শরণাপন্ন হবেন।