Advertisement
জয়শঙ্করের সঙ্গে পাক মন্ত্রীর কথা।
Advertisement
শেষ আপডেট: 17 October 2024 10:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাংহাই ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে ইসলামাবাদে গেলেও পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিত বিষয়ে আলোচনা হবে না। এমন কথা বলেই গত সোমবার দিল্লি ছেড়েছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
এসসিও-সম্মেলনে এমনিতে সদস্য দেশগুলির আলাদা করে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার সুযোগও নেই। কিন্তু ইচ্ছা থাকলে উপায় বের হয়। জানা যাচ্ছে, ইসলামাবাদে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী মুহম্মদ ইশাক দারের সঙ্গে দু-দফায় কথা হয়েছে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের। ইশাকই বর্তমানে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী।
তবে এই আলোচনা আনুষ্ঠানিকভাবে একান্তে হয়নি। মঙ্গলবার রাতে ইসলামাবাদে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁর বাড়িতে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেওয়া অতিথিদের সম্মানে নৈশ ভোজের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বিনিময়ের সময় জয়শঙ্করের কিছু সময় একান্তে কথা হয়। এরপর নৈশ ভোজে দুই বিদেশমন্ত্রী খেতে খেতে অনেকটা সময় কথা বলেছেন।
বুধবার সম্মেলন শেষে মধ্যাহ্ন ভোজের টেবিলে পাশাপাশি ছিল দুই পড়শি দেশের বিদেশমন্ত্রীর চেয়ার। জানা গিয়েছে, আতিথেয়তার কাজে নিযুক্ত পাক বিদেশ মন্ত্রকের অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ইশাক দার ও জয়শঙ্করের আসন পাশাপাশি রাখার জন্য। মধ্যাহ্ন ভোজেও দু’জনের দীর্ঘ সময় কথা হয়। সব মিলিয়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জানালা খোলার মরিয়া চেষ্টা চালিয়েছে ইসলামাবাদ। বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, দু-দেশের মধ্যে ফের কথা চালু হোক।
কী নিয়ে কথা হয়েছে দুই বিদেশমন্ত্রীর? পাকিস্তানের সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, কথা হয়েছে ক্রিকেট নিয়ে। পাকিস্তান চায় ভারতীয় দল পাক সফরে যাক। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ভারত তাতে অংশ নেবে কি না তা নিয়ে জল্পনা চলছে। ইসলামাবাদ জয়শঙ্করকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে ভারতীয় ক্রিকেট টিমের। আসলে পাকিস্তান বুঝতে পারছে ভারত যোগদান না করলে টুর্নামেন্টের ওজন কমে যাবে।
জানা গিয়েছে মধ্যাহ্ন ভোজের আসরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ মহসিন রাজা নাকভিও হাজির ছিলেন। তিনিই আবার সে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী। জয়শঙ্করের সঙ্গে তিনিও কথা বলেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৮ সাল থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দল পাক সফরে যায়নি। ২০১২-’১৩ সাল থেকে দুই দেশের নিজস্ব উদ্যোগে খেলাও বন্ধ। আন্তর্জাতিক নানা টুর্নামেন্টে দুই দেশ মুখোমুখি হয় মাত্র। ২০১৯ থেকে শুধু ক্রিকেট নয়, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক বিনিময়ও বন্ধ দুই দেশের মধ্যে। আগামী বছরও ভারতীয় দল পাক সফরে না গেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ‘হাইব্রিড মডেলে’ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড তেমনই ভাবনা নিয়ে এগচ্ছে।
তার আগে এসসিও সম্মেলনকে পাকিস্তান ক্রিকেটে অন্তত বরফ গলানোর মরিয়া চেষ্টা চালাল। যদিও ভারত সরকারের ঘোষিত অবস্থান হল বিষয়টি ক্রিকেট নয়, নিরাপত্তা এবং শক্রুতা। পাকিস্তানের মাটিতে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে নয়া দিল্লি চিন্তিত। পাশাপাশি পাকিস্তানের ভারত বিরোধী জঙ্গি তৎপরতা নিয়েও ভারত বিরক্ত। এসসিও সম্মেলনের ভাষণে নাম না করে সেকথা বলেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। জয়শঙ্কর দেশে ফেরার পর নয়া দিল্লি কী অবস্থান নেয় সেটাই এখন দেখার।
Advertisement
Advertisement