শেষ আপডেট: 28th October 2024 13:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিন সপ্তাহ আগে কর্নাটকের একটি কফি বাগান থেকে উদ্ধার হয়েছিল ব্যবসায়ীর আগুনে ঝলসানো দেহ। ঘটনার তদন্তে নেমে মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আনল পুলিশ। তদন্তকারীদের হাতে যে তথ্য উঠে এসেছে তা যে কোনও সিনেমার গল্পকেও হার মানাবে। স্বামীর থেকে আট কোটি টাকা হাতাতে না পেরে তাঁকে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। তার থেকেও বড় আশ্চর্যের মৃতদেহ লোপাট করতে ৮০০ কিলোমিটার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে চক্কর কাটে গাড়ি।
অভিযোগ, ৫৪ বছর বয়সি ব্যবসায়ী স্বামীর থেকে ৮ কোটি চেয়ে পাননি স্ত্রী। সে কারণেই পশু চিকিৎসক প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুর সাহায্য নিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করে পরে নিজের স্বামীকেই আগুনে পুড়িয়ে মারে। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৮ অক্টোবর কর্নাটকের একটি কফি বাগান থেকে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ জানতে পারে ওই দেহ ব্যবসায়ী রমেশের। এরপরই ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় স্ত্রী নীহারিকাকে গ্রেফতার করে জেরা শুরু করতেই আসল সত্য সামনে আসে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২৯ বছর বয়সি নীহারিকা জানিয়েছেন, তাঁর প্রেমিক ও বন্ধুর সাহায্য নিয়ে প্রথমে স্বামীকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিনি। পরে বাড়ি থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে কফি বাগানে ফেলে আসা হয়। পাশাপাশি প্রমাণ লোপাটের জন্য পেট্রোল ঢেলে তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। পরে ওই কফি বাগান সংলগ্ন এলাকার একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখতেই আসল রহস্য সামনে আসে।
সূত্রের খবর সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে প্রথমেই অভিযুক্তের গাড়ি চিহ্নিত করে পুলিশ। পরে সেই গাড়ির সূত্র ধরেই ব্যবসায়ী রমেশের বাড়ি পৌঁছে যান। সেখানে গিয়ে স্ত্রী নীহারিকার গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় তাঁকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানতে পেরেছে, নীহারিকা মাত্র ১৬ বছর বয়েসেই মাকে হারান। তারপর বিয়ে ও সন্তান হলেও, বেশিদিন সেই সংসার টেকেনি। বিবাহবিচ্ছেদের পর নিজের তাগিদেই ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। আদপে তেলঙ্গানার বাসিন্দা হলেও বিবাহ সূত্রে হরিয়ানাতে চলে যান। সেখানেই একটি আর্থিক কেলেঙ্কারি মামলায় জড়িয়ে জেলও খাটেন নীহারিকা। সে সময় জেলেই অভিযুক্ত অঙ্কুরের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। এরপর ২০১৮ সালে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বেঙ্গালুরু গিয়ে রমেশকে বিয়ে করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ব্যবসায়ীর স্ত্রী হলেও ২৮ বছর বয়সি পশু চিকিৎসক নিখিলের সঙ্গে তাঁর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। নিজের খরচের জন্য স্বামীর থেকে ৮ কোটি টাকা চেয়ে না পেয়েই অশান্তির শুরু। পরে প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুর সাহায্য নিয়েই রমেশকে খুন করেন নীহারিকা।