দ্য ওয়াল ব্যুরো: কথায় বলে, হিংসা, ঘৃণা, রাগ চরম পর্যায়ে পৌঁছলে মানুষ যে কত রকম অপরাধ করতে পারে তা আগে থেকে আন্দাজই করা যায় না। চারপাশে এমন উদাহরণ কম নেই। এবার তেমনই এক ঘটনার নজির মিলল দিল্লিতে। যেখানে এক তরুণী বোরখা পরে নিজেরই বাড়িতে ডাকাতি করেন। আর ধরা পড়ার পর তরুণী এমন কাণ্ডের পিছনে যে কারণ ব্যাখ্যা করেন তা শুনে হতবাক হয়ে যায় পুলিশও।

ঘটনাটি দিল্লির উত্তম নগরের সেবক পার্ক এলাকার। পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩০ জানুয়ারি কমলেশ নামে এক মহিলা তাঁর বাড়ির ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করেন।  সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের তদন্তে যা উঠে আসে তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন কমলেশ। পুলিশ অভিযোগকারিনীকে জানায়, কোনও অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী নয়, ডাকাতি করেছেন তাঁর বড় মেয়ে শ্বেতা। অভিযুক্ত জানিয়েছেন, মায়ের বোনের প্রতি ভালোবাসায় ঈর্ষার কারণেই তিনি এই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন। 
 
গত মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বোরখা পরে নিজের বাড়ি থেকে নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং কয়েক লক্ষ টাকার সোনার গয়না চুরি করেছেন শ্বেতা। প্রাথমিকভাবে ডাকাতির ঘটনাটির তদন্তে কিনারা করতে পারছিল না পুলিশ। শেষে বাড়ির সামনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যায়। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করেই বছর ৩১-এর এই তরুণীকে পাকড়াও করা হয়। পুলিশি জেরায় অপরাধের কথা স্বীকার করেন অভিযুক্ত।

পুলিশকে শ্বেতা জানিয়েছেন, তিনি মনে করেন যে তাঁর মা ছোট বোনকে খুব ভালবাসেন। সেই ঈর্ষা থেকেই নিজের বাড়িতে চুরি করেছেন তিনি। তবে এটিই একমাত্র কারণ নয়। ধার পরিশোধের জন্যে মায়ের কাছে টাকা চেয়ে মেলেনি। এদিকে, বোনের বিয়ের জন্য মা বেশ কিছু গয়না তৈরি করে রেখেছিলেন। তাই নিজের সেই বিয়ের গয়না এবং নগদ টাকা চুরি করার পরিকল্পনা করেন শ্বেতা। 

ঠিক কীভাবে ডাকাতির পরিকল্পনা করেছিলেন তরুণী? পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, জানুয়ারি মাস থেকে তিনি আলাদা থাকতেন। গত ৩০ জানুয়ারি অর্থাৎ ঘটনার দিন সবজি কেনার নাম করে বাড়ির চাবি চুরি করে বেরিয়ে যান তিনি। বাড়িতে যখন কেউ ছিল না, সেসময়ে বোরখা পরে দুপুর ২ টো নাগাদ বাড়ির মেন গেট খুলে ভিতরে ঢোকেন তিনি। এরপর আলমারির লকার খুলে নগদ টাকা ও গয়না নিয়ে পালিয়ে যান শ্বেতা। বাড়িতে ফেরার পর মা টাকা, গয়না চুরির কথা বললে তা দিব্যি না জানার ভান করেন তিনি। যদিও এত পরিকল্পনা মাফিক সব কিছু করেও শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন তরুণী।