ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 1st August 2024 12:06
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তাঁরই গাড়ির চাকায় রাস্তার জমা জলে এমন স্রোত উঠেছিল, যে সে ধাক্কায় ভেঙে গেছিল কোচিং সেন্টারের গেট, জল ঢুকে গেছিল বেসমেন্টে। সেই জলে ডুবেই মারা গেছেন তিন জন আইএএস কোচিং পড়ুয়া। দিল্লির ব্যবসায়ী মনোজ কাঠুরিয়ার বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ উঠেছে এবং তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে আদালত জানাল, সতর্ক করা সত্ত্বেও নাকি কথা শোনেননি তিনি। জমা জলের মধ্যে দিয়ে বেপরোয়া ভাবে চালিয়েছেন গাড়ি।
অন্যদিকে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করে মনোজের স্ত্রী সীমা জানান, ভিডিওয় দেখাই যাচ্ছে, গাড়িতে ব্রেকের আলো জ্বলছিল, অর্থাৎ গাড়িটি আস্তেই চলছিল। বনেট পর্যন্ত জল, সেখানে কেউই গাড়ি জোরে চালায় না। কিন্তু ওই সময়ে পিছনে যাওয়ারও উপায় ছিল না। তাই গাড়ি চালিয়ে এগোতেই হয়েছে।
তাঁর কথায়, 'ওই এলাকায় প্রায়ই জল জমে। জমা জল বারবার ধাক্কা মারছিল কোচিংয়ের গেটে, যার ফলে দরজা ভেঙেই গিয়েছিল। আমার স্বামীর গাড়ির যাওয়ার সময়ে জলের স্রোতে তা খুলে যায়। কিন্তু সেই সময়ে তিনি কী করতেন, থেমে যাওয়ার কি উপায় ছিল জলের মধ্যে? আমরা ওই প্রতিষ্ঠানের কথা জানি না, কোন বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তা আমার স্বামীও জানতেন না। তিনি যতটা পারছিলেন রাস্তার মাঝখান দিয়ে গাড়ি চালানোর চেষ্টা করছিলেন, যাতে কারও সঙ্গে ধাক্কা না লেগে যায়।'
জানা গেছে, অভিযুক্ত মনোজ কাঠুরিয়া সেদিন ফোর্স গোর্খা চালিয়ে মাত্র ৭০০ মিটার দূরে গেছিলেন। ভিডিওয় ধরা পড়েছে তাঁর গাড়ির জন্যই ভাঙল কোচিংয়ের গেট। তাঁর বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকত খুনের মামলা রুজু হয়েছে। তাঁর আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, ওই রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ ছিল না। তাঁর মক্কেলের গাড়ি ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিলোমিটার বেগে চলছিল, যাকে দ্রুতগামী বলা যায় না। রাস্তায় সে সময়ে আড়াই ফুট জল জমে ছিল বলেও জানা গেছে।
তবে এই সমস্ত দাবি, মনোজ কাঠুরিয়ার আইজীবীর সওয়াল আদালতে গৃহীত হয়নি। আদালত বলেছে, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, যে অভিযুক্ত মনোজ কাঠুরিয়া জলাবদ্ধ ওই রাস্তায় তাঁর এসইউভি গাড়িটিকে বেশ জোরেই চালাচ্ছেন, যাতে জমা জলে আলোড়ন তৈরি হচ্ছে। এই ঘটনা পরোক্ষভাবে তিন পড়ুয়ার মত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আদালত আরও বলেছে, যে সিসিটিভি ফুটেজ এ-ও দেখা গেছে যে চালকের আসনে বসা মনোজ কাঠুরিয়াকে এর আগেও কয়েকজন পথচারী সাবধান করছিলেন, সামনে সম্ভাব্য বিপদ হতে পারে বলে সতর্ক করছিলেন। সে কথায় মনোজ মনোযোগ দেননি। তাই আদালতের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, মনোজের বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশ গুরুতর। তাঁর জামিন খারিজ।