শেষ আপডেট: 2nd January 2025 19:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বেঙ্গালুরুর তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অতুল সুভাষের মতো দিল্লির বেকারি মালিক ৪০ বছর বয়সি পুনীত খুরানাও মৃত্যুর আগে নিজের সমস্ত অভিযোগ ভিডিও করে রেকর্ড করে গেছেন। সেই সব ভিডিও থেকে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। উঠে আসছে স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির মানসিক অত্যাচারের কথাও।
ইংরেজি বর্ষবরণের রাতে দিল্লির কল্যাণ বিহার এলাকার মডেল টাউনে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন খুরানা। অভিযোগ, স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের কাছে পদেপদে হেনস্তার শিকার হতেন তিনি। স্ত্রীর দাবি মানতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছিল তাঁর।
ভিডিওতে বেকারি মালিক জানিয়েছেন, স্ত্রী মনিকা পাহওয়ার সঙ্গে মিউচুয়াল ডিভোর্স চলছিল তাঁর। মনিকা ও তাঁর বাড়ির লোকজন বিভিন্ন বিষয়ে হুমকি দিচ্ছিলেন এরই মাঝে। দুই তরফেই কিছু শর্তে ডিভোর্স ফাইল করা হলেও খুরানা অভিযোগ করেন, এর পরও মনিকা ও তাঁর বাড়ির লোকজন খুরানার থেকে অতিরিক্ত টাকা ও কিছু জিনিস দাবি করেন। যা তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না। অতিরিক্ত ১০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয় যা দেওয়া খুরানার তরফে কার্যত অসম্ভব বলে তাঁকে বলতে শোনা যায়। আর ঠিক এই কারণেই তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন বলে ভিডিওতে জানান।
বলেন, 'আমার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাকে অমানবিক অত্যাচার করছে যার ফলে আমি আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বেশ কিছু শর্তে এই ডিভোর্স ফাইল হয়। যা ১৮০ দিনের মধ্যে আমাকে পূরণ করতে হবে। কিন্তু স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির সকলেই নতুন নতুন শর্ত দিতে শুরু করে। আমার থেকে ১০ লক্ষ টাকাও চাওয়া হয়। আমার সেই ক্ষমতা নেই। আমি বাড়ি লোকের থেকেও চাইতে পারি না কারণ ওরা ইতিমধ্যেই অনেক টাকা দিয়েছে।'
এদিকে পুনীত খুরানার মর্মান্তিক আত্মহত্যার পর নতুন সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছে। যেখানে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া হতে দেখা যায়। একটি খালি ঘরে তিনি ও তাঁর স্ত্রীর খুব জোরে কথা বলছেন। মুখোমুখি বসা অবস্থায় তাঁদের মধ্যে কঠিন কঠিন ভাষায় বাক্য বিনিময় চলছে। যেখানে মনিকাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, আমি তোমায় ১০ মিনিট সময় দিচ্ছি, ঠান্ডা মাথায় বসো। আমায় বলো তুমি কী করতে চাও, আমায় স্পষ্টভাবে সোজাসুজি জবাব দাও।
তর্কবিতর্কের মধ্যে মনিকা পাহওয়াকে বলতে শোনা যায়, এভাবে চলতে থাকায় তাঁর জীবনও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এরপর তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, পুনীতের আত্মীয়স্বজনদের ঠিকানা ও ফোন নম্বর তাঁর কাছে আছে। তিনি সব্বাইকে বলে দেবেন কী ঘটছে। এর জবাবে দিল্লির 'ফর গডস কেক' নামে বেকারির মালিক খুরানা বলেন, যে কোনও দিন। আরও একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পুনীত তাঁর শ্বশুরকে বাড়ির জন্য ২ কোটি টাকা ট্রান্সফারের বিষয়ে কথা বলছেন।
খুরানা পরিবারের দাবি, তাঁদের কাছে এরকম অসংখ্য ভিডিও ও অডিও ক্লিপ রয়েছে। যা পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তাঁরা অভিযোগের সপক্ষে যুক্তি দেখাতে পারেন। ছেলের বউ ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে এই ঘটনার বিচার চেয়েছেন। পুলিশ খুরানার ফোন হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। পুনীতের মায়ের দাবি, 'ওদের পরিবার বিভিন্নভাবে আমার ছেলের উপর মানসিক চাপ চালিয়ে যাচ্ছিল।'
পুনীতের বোনের অভিযোগ, 'মনিকা এবং ওর বোন সঙ্গে বাবা-মাও মানসিকভাবে অত্যাচার চালাচ্ছিল। ওই মহিলা পুনীতের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল হ্যাক করে ওকে ব্ল্যাকমেলও করে।'
গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। তারই মাঝে পুনীতের করে যাওয়া ভিডিও তদন্তের জাল গোটাতে সাহায্য করবে।