Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 23 February 2024 14:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: জঙ্গি দমন অভিযান হোক বা নিরাপত্তা রক্ষার কাজ, নিজের জীবন দিয়েও দেশ রক্ষার কাজ করেন বীর জওয়ানরা। আর লড়াইয়ে প্রায় সময়েই জওয়ানদের পা বা হাত বা শরীরের কোনও অংশ এমন ভাবে জখম হয় যে, তা অস্ত্রোপচারে বাদ দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় থাকে না। কিছু ক্ষেত্রে হাঁটু থেকে বা পুরো পা, কখনও কবজি বা কনুই থেকে হাত বাদ দিতে হয়। তখন পঙ্গু হয়ে সারা জীবন কাটানো ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না। কিন্তু প্রস্থেসিস যদি সঠিক হয় এবং আধুনিকমানের হয়, তাহলে পঙ্গুত্বের যন্ত্রণা সইতে হয় না। বরং জীবনযাপন অনেক সহজ হয়ে যায়। এই কাজই এবার দেশের জওয়ানদের জন্য করতে চলেছেন এইমসের চিকিৎসক-গবেষকরা। কৃত্রিম পা নিয়ে হাঁটবেন জওয়ানরা। তবে যে সে প্রস্থেসিস নয়, এমন ধরনের ‘এক্সোস্কেলিটাল প্রস্থেসিস’ যা নতুন জীবন দেবে পঙ্গু হয়ে যাওয়া জওয়ানদের।
দিল্লি এইমসের সঙ্গে এই কাজে হাত মিলিয়েছে দেশের প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও। এইমসের অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. ভাবুক গর্গ বলছেন, দেশের যে জওয়ানরা পঙ্গু হয়ে বাঁচছেন তাঁদের কথা ভেবেই বিশেষ রকম প্রস্থেসিস বা কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি করা হচ্ছে। তবে এই প্রস্থেসিস সকলের জন্যই। দুর্ঘটনা বা কোনও শারীরিক অসুস্থতার কারণে যে রোগীদের হাত বা পা অপারেশন করে বাদ দিতে হয়েছে তাঁরাও কৃত্রিম অঙ্গ ব্যবহার করে তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। দৈনন্দিক কাজকর্ম করতে পারবেন সহজেই।
কী এই এক্সোস্কেলিটাল প্রস্থেসিস?
দক্ষিণ আফ্রিকান অ্যাথলিট অস্কার পিস্টোরিয়াসের কথা মনে আছে? মাত্র ১১ মাস বয়সে হাঁটুর নীচ থেকে দু’টি পা-ই বাদ যায় তাঁর। পরবর্তী সময়ে প্রস্থেটিক ব্লেডস নিয়ে প্যারালিম্পিক গেমসে একাধিক স্বর্ণপদক জয় করেছেন তিনি। তাঁকে বলা হত ব্লেড রানার (Blade Runner)। কাজেই প্রস্থেসিস কতটা কার্যকরী হতে পারে তা আগেও প্রমাণিত হয়েছে।
দিল্লি এইমসের অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. রবি মিত্তল বলছেন, তাঁদের নতুন ল্যাবরেটরিতে প্রস্থেসিস বা কৃত্রিম অঙ্গ তৈরি নিয়ে উন্নতমানের গবেষণা চলছে। কৃত্রিম হাত বা পা তৈরি করলেই হয় না, শরীরের সঙ্গে সেই নতুন অঙ্গ কীভাবে খাপ খাবে সেটাও দেখা দরকার। অর্থাৎ নতুন অঙ্গের মুভমেন্টের সঙ্গে শরীরের পেশি ও হাড়ের নড়াচড়া, পেশির অবস্থান এইসবও দেখতে হয়।
অর্থোপেডিক সার্জনরা বলছেন, প্রস্থেসিস দু’রকমের হয়-- ফাংশনাল ও নন-ফাংশনাল। কসমেটিক প্রস্থেসিস বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-ফাংশনাল হয়। ধরা যাক, হাতের আঙুল বাদ গেছে, তখন সেখানে কসমেটিক প্রস্থেসিস করা যেতে পারে। কৃত্রিম আঙুল দেখতে আসলের মতোই হবে তবে তার মুভমেন্ট তেমন হবে না। আবার ধরা যাক, হাঁটুর নীচ থেকে পায়ের অংশ বাদ গেছে, সেখানে ফাংশনাল প্রস্থেটিক করতেই হবে। কারণ পায়ের মুভমেন্ট দরকার।
প্রস্থেসিসের গঠন দু’রকমের হয়, এক্সোস্কেলিটাল ও এন্ডোস্কেলিটাল। এক্সোস্কেলিটালের ক্ষেত্রে বাইরের কাঠামো তৈরি করতে হয় যা শক্তপোক্ত হয়। এই কাঠামো এমনভাবে তৈরি হয় যা শরীরের সঙ্গে যোগ করলে শরীরের পেশির নড়াচড়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কাজ করতে পারে। এইমসের ডাক্তাররা বলছেন, এইরকমই উন্নতমানের এক্সেস্কেলিটাল প্রস্থেসিস তৈরি করা হচ্ছে। সকেট, বডি, কন্ট্রোল সিস্টেম, জয়েন্ট ও টার্মিনাল ডিভাইস সবই আধুনিক মানের। শুধু অঙ্গহানি নয়, অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথাতেও অনেক সময় হাত বা পা অকেজো হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কাজ করবে এই এক্সোস্কেলিটাল প্রস্থেসিস।
Advertisement
Advertisement