ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে একের পর এক উদ্ধার করা হচ্ছে কারখানা শ্রমিকদের দেহ। উদ্ধারকাজের শেষ পর্বের কাজ এখনও চলছে বলে জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
উদ্ধারকাজ চালিয়ে একের পর এক বেরিয়ে আসছে মৃতদেহ।
শেষ আপডেট: 1 July 2025 05:33
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তেলঙ্গানার রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪২। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ সূত্র এই খবর জানিয়েছে। উদ্ধারকাজ চালিয়ে একের পর এক বেরিয়ে আসছে মৃতদেহ। যাঁদের শনাক্ত করা মুশকিল হচ্ছে। সোমবার রাত পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল ১৩। মঙ্গলবার সকাল থেকে আরও দেহ উদ্ধার করার পর তা প্রথমে ৩৪ এবং পরে ৪২-এ গিয়ে ঠেকে।
ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে একের পর এক উদ্ধার করা হচ্ছে কারখানা শ্রমিকদের দেহ। উদ্ধারকাজের শেষ পর্বের কাজ এখনও চলছে বলে জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাবেন বলে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, সোমবার সকালে একটি রিঅ্যাক্টর ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দামোদর রাজানরসিংহ জানান, বিস্ফোরণের সময় ৯০ জনের মতো শ্রমিক কারখানায় কাজ করছিলেন। কিন্তু, স্থানীয় সূত্রের খবর, অন্তত শখানেকের বেশি কর্মী কারখানায় মজুত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গতকাল, সোমবার সকালে তেলঙ্গানার সঙ্গারেড্ডি জেলার শিল্পাঞ্চলীয় এলাকায় একটি রাসায়নিক কারখানায় তীব্র বিস্ফোরণ হয়। রাসায়নিক ও আগুনে ঝলসে আরও বহু কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেন।
পদস্থ এক পুলিশ কর্তা সোমবার বলেছিলেন, বিস্ফোরণের কারণ জানা যায়নি। ধ্বংসস্তূপ পুরোপুরি না সরানো গেলে ফরেনসিক কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। বিস্ফোরণে কারখানার শেডটি পুরোপুরি উড়ে গিয়েছে। তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কয়েকজন বিস্ফোরণের জেরে উড়ে গিয়ে প্রায় শখানেক মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। কারখানার বিস্ফোরণে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে এবং সংলগ্ন একটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বিস্ফোরণে আগুন ধরে যাওয়ার বেশিরভাগ কর্মী ও শ্রমিক ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ১১টি দমকল গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই ৫ জনের মৃত্যু হয় এবং জখমের সংখ্যা বহু বলে পুলিশ জানিয়েছে। ভেঙে পড়া ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধারের কাজ এখনও চলছে। স্থানীয়দের দাবি, বিস্ফোরণের সময় সেখানে অন্তত শখানেকের বেশি শ্রমিক ও কর্মী ছিলেন।
জেলাশাসক ও এসপি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজের তদারক করেন। তাঁরা জানান, সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কারখানায় মাইক্রোক্রিস্ট্যালিন সেলুলোজ ও খাবারে মেশানোর রাসায়নিক তৈরি হতো। বিস্ফোরণের জেরে গোটা এলাকা রাসায়নিক ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তাতে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাই পুলিশ-প্রশাসন দ্রুত আশপাশের মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যায়।