শেষ আপডেট: 21st February 2025 14:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সম্ভলের (Smabhal) হিংসা ছড়ানোয় মদত জোগানোর পিছনে ফের উঠে এল অন্ধকার দুনিয়ার বেতাজ বাদশা দাউদ ইব্রাহিমের (Dawood Ibrahim) নাম। শুধু তাই নয়, এদেশের মাটিতে বসে নয়, সুদূর সংযুক্ত আরব আমিরশাহির (UAE) মাটিতে এই হিংসা ছড়ানোর ব্লু প্রিন্ট (Blueprint) তৈরি হয়েছিল। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে দাউদ ঘনিষ্ঠ এক শাগরেদের নেপথ্য হাতের কথা জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে সিট ৪,৪০০ পাতার চার্জশিটটি দাখিল করে। পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, চার্জশিটে মোট ৭৯ জনের নাম আনা হয়েছে। তারা সবাই বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছে পুলিশ ওই চার্জশিটে। তদন্ত যেভাবে এগোতে থাকবে, সেইমতো অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।
তদন্তকারীরা চার্জশিটে জানিয়েছেন, শরিক সাঠা সম্ভলের এক বাসিন্দা, সে বর্তমানে আমিরশাহিতে রয়েছে। এই সাঠাই মূল সন্দেহভাজনের তালিকায় রয়েছে। তার ইন্ধনেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে সম্ভলে। পুলিশ জানিয়েছে, সাঠার সঙ্গে অন্ধকার জগতের ডন দাউদ ইব্রাহিমের এবং পাক চর সংস্থা আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। ভারত ছেড়ে পালানোর আগে সাঠা এক বিরাট গাড়ি চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিল। দিল্লি-এনসিআর এলাকায় প্রায় ৩০০-র বেশি গাড়ি চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
পুলিশের সন্দেহ, ভুয়ো পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে দেশ ছেড়ে পালায়। সাঠার দলের আরও অনেকের নাম রয়েছে এই চার্জশিটে। তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, সম্ভলে হিংসা ছড়াতে বিদেশি আর্থিক মদত ছিল। সম্ভলের কিছু লোকের অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক মাত্রায় টাকা লেনদেনের খোঁজ মিলেছে। এমনকী বিদেশে তৈরি কার্তুজ পাওয়া গিয়েছে বলে চার্জশিটে জানিয়েছে পুলিশ। যে বুলেট তৈরি হয়েছে পাকিস্তানে ও আমেরিকায়।
পুলিশ নিশ্চিত যে, সাঠার সাঙ্গোপাঙ্গরাই গুলিচালনার সঙ্গে জড়িত ছিল। মৃত চারজনের পরিবার এফআইআর করলেও পঞ্চম জনের কোনও অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়নি। তদন্তে স্থানীয় রাজনৈতিক যোগাযোগের কথাও উল্লেখ করেছে পুলিশ। একটি চার্জশিট দাখিল করা হতে পারে, যাতে স্থানীয় সমাজবাদী পার্টির বিধায়ক ইকবাল মাহমুদের ছেলে সুহেইল ইকবাল ও সপার এমপি জিয়াউর রহমান বরক-এর নাম দিতে পারে পুলিশ। সাঠার সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতিকদের দহরম-মহরম ছিল বলে পুলিশ জেনেছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর ২৪ নভেম্বর আদালতের নির্দেশে পুরাতাত্ত্বিক বিশেষজ্ঞরা মুঘল আমলের শাহি জামা মসজিদ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁদের উপর হামলা হয়। দ্রুত পরিস্থিতি বিগড়ে গিয়ে তা জনহিংসার রূপ নেয়। সেই ঘটনায় গুলিতে পাঁচজনের মৃত্যু ও ২৯ জন পুলিশ কর্মীসহ বহু মানুষ জখম হন।