বিচারপতি বিভি নাগরত্না ও এন কোটেশ্বর সিং।
শেষ আপডেট: 11th December 2024 13:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিবাহ সংক্রান্ত মামলায় আইন অপব্যবহারের প্রবণতা সম্পর্কে কড়া বার্তা দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। মঙ্গলবার বিচারপতি বিভি নাগরত্না ও এন কোটেশ্বর সিং-এর বেঞ্চ একটি রায় দিতে গিয়ে বলে, স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আইনের ধারা ৪৯৮(এ)-কে ব্যক্তিগত প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায় না।
এদিন তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের একটি রায়কে খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ৪৯৮(এ) ধারা স্ত্রীদের উপর স্বামী বা তাঁর আত্মীয়দের কোনও রকম নিষ্ঠুরতা বা অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, এই ধারা ক্রমাগত অপব্যবহৃত হচ্ছে, যা বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে অশান্তি আরও বাড়াচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ বলে, ‘স্রেফ নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করা হলে এবং সেসব অভিযোগের সপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে, সেটি শাস্তিমূলক মামলার ভিত্তি হতে পারে না।’
ধারা ৪৯৮(এ): কী বলছে আইন?
ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪৯৮(এ) বা ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (BNS) ৮৬ ধারা অনুযায়ী, কোনও স্ত্রীর প্রতি স্বামী বা তাঁর আত্মীয়রা নিষ্ঠুর আচরণ করলে, তাতে অভিযুক্তর তিন বছরের কারাদণ্ড এবং জরিমানার বিধান রয়েছে। এই আইনের মূল লক্ষ্য ছিল, দ্রুত হস্তক্ষেপ করে, সমস্যার সমাধান করে, মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়া।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ জানায়, ‘বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই আইনের অপব্যবহারও বেড়েছে। কখনও কখনও স্ত্রীর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত দাবিদাওয়া মেটানোর জন্য স্বামী ও তার পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টির হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ধারা।’
কোর্ট আরও বলে, অস্পষ্ট ও সাধারণ অভিযোগ করার মাধ্যমে আইনের অপব্যবহার হয় এবং এর ফলে স্বামীর পক্ষকে আইন-বহির্ভূতভাবে চরম চাপের মুখে পড়তে হয়। বেঞ্চ বারবার এই বিষয়ে সতর্ক করেছে, যে স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে মামলা চালানো উচিত নয়।
তেলেঙ্গানা হাইকোর্ট থেকে এমনই এক মামলা সুপ্রিম কোর্টে ওঠায় শীর্ষ আদালত তা খারিজ করে জানায়, মামলাটি মূলত স্ত্রীর পক্ষ থেকে ব্যক্তিগত প্রতিশোধ চরিতার্থ করার জন্যই করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এটিকে ‘গুরুতর ভুল’ বলে উল্লেখ করে।