উচ্চ আদালতের বক্তব্য, সংবিধানের ১৯ (১) অনুচ্ছেদে (article 19 (1) উল্লেখিত বাক স্বাধীনতা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না।
ফাইল ছবি।
শেষ আপডেট: 5 June 2025 04:29
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাক স্বাধীনতা (Freedom of Speech) সীমাহীন নয়। ভারতের প্রত্যেক নাগরিককেই সংবিধানিক অধিকার (Constitutional rights) প্রয়োগের সময় যুক্তিসম্মত সীমাবদ্ধতার দিকটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) উদ্দেশে এক মামলায় এই মন্তব্য করেছে এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Allahabad high court)। উচ্চ আদালতের বক্তব্য, সংবিধানের ১৯ (১) অনুচ্ছেদে (article 19 (1) উল্লেখিত বাক স্বাধীনতা প্রয়োগের ক্ষেত্রেও সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট মামলাটিতে সেনা বাহিনীকে (Indian defence force) অমর্যাদা করার অভিযোগ আনা হয় উত্তর প্রদেশের এক আদালতে। নিম্ন আদালত গত ফেব্রুয়ারিতে রাহুল গান্ধীকে সশরীকে আদালতে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্য পেশ করতে বলে। কংগ্রেস নেতা সেই আদেশ এবং মামলাটি পুরোপুরি খারিজের আবেদন নিয়ে এলাহাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন। হাই কোর্টের বিচারপতি সুভাষ বিদ্যার্থী রাহুলের আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন।
তিন বছরের পুরনো একটি মামলায় এলাহাবাদ হাই কোর্ট এই রায় দিলেও ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, উচ্চ আদালতের পর্যবেক্ষণ বিজেপির হাত শক্ত করবে। অপারেশন সিঁদুর অভিযান নিয়েও রাহুল গান্ধী সেনা বাহিনীর সাফল্যের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিজেপি ইতিমধ্যে কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে দেশের বিরোধিতার অভিযোগ এনেছে। বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্র এমনকী রাহুলকে পাকিস্তানের বেতনভুক দালাল পর্যন্ত বলেছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে পদ্ম শিবির এবার রাহুলকে আক্রমণ জোরদার করতে পারবে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন উদয় শঙ্কর শ্রীবাস্তব। তিনি বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশনের অবসরপ্রাপ্ত ডিরেক্টর জেনারেল। পদটি সেনাবাহিনী কর্নেলের সমতুল। বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন মূলত দুর্গম সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে।
শ্রীবাস্তব মামলায় বলেছেন, রাহুল গান্ধী ভারত জোড়ো যাত্রায় অরুণাচলের সীমান্তে দাঁড়িয়ে পূর্ব লাদাখে চিনা সৈন্যের হাতে ভারতীয় সেনার নিহত হওয়ার ঘটনাটি এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যা ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে অবমাননার শামিল। কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে সেনাকে অবমাননার মামলা দায়ের করেন তিনি।
এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতির মতে, সেনা বাহিনীর সমালোচনা করার অভিযোগ উঠে থাকলে সশরীরে হাজির হয়ে নিজের বক্তব্য জানানোই যথার্থ হবে। নিম্ন আদালত রাহুল গান্ধীকে তলব করে ভুল কিছু করেনি। এই মামলাতেই বিচারপতি বলেছেন, রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যসত্য নিম্ন আদালত বিচার করবে। কিন্তু তিনি যেহেতু উচ্চ আদালতের কাছে আইনি সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি দাবি করেছেন, তাই আদালত স্মরণ করিয়ে দিতে চায়, মৌলিক অধিকারও সীমাহীন নয়। কথা বলার সময় সংযম জরুরি।