ব্ল্যাকআউটের মহড়া।
শেষ আপডেট: 6 May 2025 15:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে আগামীকাল, ৭ মে, সারা দেশে নজিরবিহীন নিরাপত্তা মহড়ার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই মহড়ার অংশ হিসেবে ৫৪ বছর পর প্রথমবারের মতো দেশজুড়ে ‘ক্র্যাশ ব্ল্যাকআউট’ ব্যবস্থা কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য প্রশাসনগুলিকে। স্বাভাবিকভাবেই দেশজুড়ে এই নির্দেশ ঘিরে কৌতূহল ও উদ্বেগ চড়েছে তুঙ্গে।
‘ব্ল্যাকআউট’ বলতে বোঝায় নির্দিষ্ট সময়ে কোনও শহরের সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া, যার মূল উদ্দেশ্য শত্রুপক্ষের বিমান হামলার সময় তাদের টার্গেট নির্ধারণে বিভ্রান্তি তৈরি করা। জনজীবনের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই এই ব্যবস্থা।
২০০৩ সালের একটি সরকারি নথি, General Principles of Civil Defence in India-তে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ব্ল্যাকআউট সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন। সেখানে বলা হয়েছে, “যদি কোনও এলাকা সম্পূর্ণ অন্ধকার থাকে, তাহলে পাইলটের মানসিক উদ্বেগ বেড়ে যায় এবং টার্গেট ঠিক করা কঠিন হয়ে পড়ে।” তাই নির্দেশে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আলো এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যাতে ৫,০০০ ফুট উচ্চতা থেকেও তা দৃশ্যমান না হয়।
এই মহড়ার সময়ে নীচের নিয়মগুলি পালন করতে বলা হয়েছে—
স্ট্রিট লাইট: থাকলেও আলো কেবল নীচের দিকে পড়বে। ২৫ ওয়াটের বেশি শক্তিশালী আলো নিষিদ্ধ।
বাড়ির আলো: জানালা বা দরজা দিয়ে বাইরে যাতে আলো না পড়ে, সে দিক নজর রাখতে হবে।
কারখানার আলো ও গাড়ির হেডলাইট: কঠোর নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
বিলবোর্ড ও বিজ্ঞাপন: বাজার এলাকায় আলোকিত বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ।
তবে সম্পূর্ণ অন্ধকার না করে ‘নিয়ন্ত্রিত আলো’ ব্যবহারের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, যাতে জনজীবন একেবারে স্তব্ধ না হয়ে পড়ে।
দেশের প্রতিটি সিভিল ডিফেন্স জেলা ও শহরে এই মহড়া চালানো হবে বলে নির্দেশ এসেছে। বিশেষ করে সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলোতে বাড়তি সতর্কতা জারি হয়েছে। যেহেতু এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সম্ভাব্য বিমান হামলার প্রস্তুতি, তাই এই মহড়াকে কেবল নিরাপত্তা প্রদর্শন নয়, যুদ্ধকালীন অনুশীলন বলেই দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক কথায়, ৫৪ বছর পর দেশের মানুষ প্রত্যক্ষ করতে চলেছে এক অভূতপূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থা, যার প্রতিটি পদক্ষেপে থাকবে যুদ্ধের ছায়া।