শেষ আপডেট: 29th July 2024 13:28
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তিন সতীর্থের করুণ মৃত্যুর প্রতিবাদে দিল্লির করোল বাগে ছাত্র বিক্ষোভ সোমবারেও চলছে। ইউপিএসসি-র আইএএস পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুপুর পর্যন্ত দিল্লি পুরসভার তরফে কেউ তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আসেননি। সাহিল নামে এক সিভিল সার্ভিসেসের পরীক্ষার প্রত্যাশী বলেন, গত দুদিন ধরে আমরা এখানে বসে আছি। গতকাল আমরা আমাদের অভিযোগপত্র জমা দিয়েছি।
মণীশ কুমার নামে আরেকজন ছাত্র বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি বিকল হয়ে গিয়েছিল। যে কারণেই বেশ কয়েকজন বেসমেন্টে অবস্থিত লাইব্রেরিতে আটকে পড়েছিল। এই ঘটনার জন্য দায়ী কর্তৃপক্ষ এবং ইচ্ছা করলেই এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। বায়োমেট্রিক বিকল হলে দ্বিতীয় বিকল্প ব্যবস্থা রাখা প্রয়োজন। তাহলে এই ঘটনা হয়তো ঘটত না, বলেন তিনি।
বিক্ষোভকারীদের একজন পুনীত সিং বলেন, ওই বাড়িতে আপৎকালীন নিকাশের কোনও ব্যবস্থা ছিল না। বেশিরভাগ বাড়িরই ঢোকা ও বেরনোর পথে বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা রয়েছে। গোটা বাড়িতে কোনও ব্যালকনি নেই। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলে ভিতরেই পড়ে থাকতে হবে। বাঁচার বা উদ্ধারের বিকল্প পথ নেই। আগুন লাগলেও কিছু করার থাকবে না। আমাদেরও বেরনোর পথ নেই, কেউ বাঁচাতেও ঢুকতে পারবে না বায়োমেট্রিক ছাড়া।
অন্যদিকে, দিল্লির কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল ঢুকে তিন পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আরও পাঁচজনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। এনিয়ে মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সোমবার জানান ডিসিপি হর্ষ বর্ধন। আগেই কোচিং সেন্টারের দুই মালিককে ধরেছিল পুলিশ। পুলিশ কর্তা জানান, এই ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাঁদের কাউকে ছাড়া হবে না।
এদিকে, এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনীতির জলঘোলা হতে শুরু করেছে। বিজেপির এমপি প্রবীণ খান্ডেলওয়াল বলেন, ৩ ছাত্রের মৃত্যুর জন্য আম আদমি পার্টিকে দায়িত্ব নিতে হবে। পুরসভা আপের হাতে। গত ৯ বছর ধরে এরা দিল্লিতে ক্ষমতায় রয়েছে। প্রতিবছর এ ধরনের ঘটনা ঘটলেও আপ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
অন্যদিকে, কংগ্রেস সাংসদ মানিকম ঠাকুর লোকসভায় এদিন একটি মুলতুবি প্রস্তাব এনেছেন। তিনি দিল্লির পরিকাঠামো নিয়ে সর্বাত্মক আলোচনার দাবি তুলেছেন। কংগ্রেস এমপি শশী তারুর মৃতদের পরিবারবর্গকে শোক জানাতে হাসপাতালে যান। শশী তারুর এই ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর কথায়, ক্ষতিপূরণই যথেষ্ট নয়, এই জাতীয় ঘটনা যাতে আর না ঘটতে পারে তা ঠেকানোই প্রথম কথা।
মহারাষ্ট্রে উদ্ধব-সেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত মোদী সরকারের প্রতিনিধিকে প্রতিবাদী ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, সরকারের কেউ একজন পড়ুয়াদের ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করলে ভালো কাজ হতো। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে একজনও বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস দেখাননি। প্রধানমন্ত্রী মোদী বিশ্ব নিয়ে চিন্তিত...কিন্তু তিনি মণিপুর যাওয়ার সময় পাননি। সেই রকম বিক্ষোভকারী ছাত্রদের সঙ্গেও কথা বলবেন না, অভিযোগ রাউতের।
এদিকে, এই বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ আবেদন জমা পড়েছে। তাতে রাজেন্দ্র নগরের এই ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এর আগে একটি অভিযোগ জমা পড়লেও সে বিষয়ে খতিয়ে না দেখার জন্য দিল্লি পুরসভার আধিকারিকদের বিরুদ্ধেও সরজমিন তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে আবেদনে।