শেষ আপডেট: 30th October 2024 14:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাইবার প্রতারণা রুখতে বিশেষ পদক্ষেপ কেন্দ্রের। ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ খতিয়ে দেখতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সূত্রের খবর, অভিযোগ খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিতেই এমন পদক্ষেপ কেন্দ্রের। জানা যাচ্ছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ই নতুন কমিটি পরিচালনা করবেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব নতুন কমিটির মাথায় থাকবেন। ইতিমধ্যে দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কো অর্ডিনেশন সেন্টার।
মঙ্গলবারই ৩০ ঘণ্টা ধরে 'ডিজিটাল অ্যারেস্ট' হয়ে থেকে, মুক্তি পান হায়দরাবাদের এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী! স্বস্তির বিষয় হল, বছর চুয়াল্লিশের ওই ব্যক্তির কোনও টাকা খোয়া যায়নি। পুলিশের সহায়তায় সাইবার প্রতারণা এড়াতে পারেন তিনি।
জানা জায়, আর্থিক তছরূপের মিথ্যে অভিযোগ তুলে প্রায় ৩০ ঘণ্টা ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয় তাঁকে। শেষে প্রযুক্তিগত ত্রুটির জেরেই মুক্তি পান তিনি। সর্বস্ব খোয়াতে গিয়েও অবশেষে সাইবার প্রতারকদের হাত থেকে রক্ষা পান ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী।
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ২০২৩ সালেও সেই সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৫ লাখের বেশি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়ে সাড়ে ৯ লাখ। ২০২১ সালে তা ছিল সাড়ে ৪ লাখের কাছাকাছি। গত তিন বছরের পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যায়, সাইবার সংক্রান্ত অপরাধের উদ্বেগ ঠিক কতটা গুরুতর।
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ আসলে কী?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, নারকোটিক্স শাখা, আরবিআই, ট্রাই, শুল্ক বা আয়কর আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফোন করেন প্রতারকেরা। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগের কথা বলা হয়। কখনও আবার তাঁর সন্তানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এক বার সেই ফাঁদে পা দিলেই ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয় ব্যক্তিকে।
ফোন করার সময় যে তদন্ত সংস্থার নাম নিয়ে ফোন করা হয়েছে, সেই সংস্থার ইউনিফর্ম পরে থাকেন প্রতারকেরা। সংস্থার দফতরের আদলে ঘরও সাজানো হয়। তাই ভিডিও কলে সেসব দেখে যথেষ্ট বিশ্বাস করে ফেলেন 'টার্গেট' হওয়া ব্যক্তি।
এর পরে 'মামলা' থেকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে মোটা টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে বলেও ভয় দেখানো হয়। এ ভাবেই সাধারণ মানুষদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। এই ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন। সাবধান করে বলেছেন, ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’ বলে কিছু হয় না। দেশের কোনও আইনে এই ধরনের গ্রেফতারির কথা বলা নেই।