শেষ আপডেট: 25th July 2024 12:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিট-কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আসছে সিবিআইয়ের হাতে। সম্প্রতি জানা গেছে, ৩৫ থেকে ৬০ লক্ষ টাকায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র কিনেছিলেন পড়ুয়ারা! চুক্তি ছিল, ডাক্তারিতে সুযোগ পেলে দিতে হবে আরও ২০ লক্ষ টাকা করে।
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এভাবে ১২০ থেকে ১৫০ জন পরীক্ষার্থীর কাছে গিয়েছিল এই ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র। বিহারের পড়ুয়াদের জন্য রেট বাঁধা ছিল ৩৫-৪৫ লাখ টাকায়, আর অন্যদের জন্য ৫৫-৬০ লাখ টাকা। গুজরাতের গোধরা, মহারাষ্ট্রের লাতুর, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ ও পাটনা-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে পড়েছিল এই প্রশ্ন।
সিবিআই জানিয়েছে কোটি কোটি টাকার লেনদেন করা হয়েছে এই প্রশ্নপত্র কেলেঙ্কারিতে। তবে বিপুল সাবধানতা অবলম্বন করেছে অপরাধীরা। বেশিরভাগ টাকা নগদে দেওয়া হয়েছিল। সুযোগ পেলে ২০ লক্ষ টাকা যে আরও দেওয়ার কথা ছিল, তার জন্য আগে থেকেই পোস্ট ডেটে চেক লিখে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনায় প্রচুর পাসবুক, চেক, এটিএম কার্ড বাজেয়াপ্ত করেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের এক অফিসারের কথায়, 'অভিযুক্তরা খুব সাবধানে এই কাজটি করছিল। শুধু টাকা লেনদেনে সতর্কতা নয়। প্রশ্নপত্র গণফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা নিয়েও সচেতন ছিল তারা। সেই জন্য, প্রশ্নপত্র হ্যান্ডেল করার কাজে তারা কয়েকজনই থাকত, খুব সীমিত সংখ্যায়। দলের সব সদস্যের হাতে প্রশ্ন ছাড়েনি তারা। কারণ তারা জানত, যে কোনও সোশ্যাল মিডিয়ায় পেপার ফাঁস হলে তা ভাইরাল হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা বাতিল হতে পারে।'
জানা গেছে, পরীক্ষার দিন সকাল ৮টা ০২ মিনিটে এক্সাম রুমে ঢোকে অভিযুক্তরা এবং প্রশ্নের সিল খুলে, ছবি তুলে, বান্ডিলটি আবার সিল করে রেখে সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে বেরিয়ে যায়। এর পরে একজন সলভার এসে সমাধান করে সেটি। কোনও ডিজিটাল মিডিয়ায় তারা প্রশ্ন লেনদেন করেনি, ব্যবহার করেনি কোনও প্রিন্টারও।
তবে সিবিআই সূত্রের খবর, এতে করে লাভের লাভ খুব কিছু হয়নি। কারণ মাত্র চারটি স্পটেই প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করতে পেরেছিল অভিযুক্তরা। তার উপরে সময় খুব কম থাকায়, প্রশ্ন কিনেও তার খুব বেশি সুবিধা নিতে পারেনি তারা। তার উপরে কারও মাথা তেমন ভাল নয়। তাই প্রশ্ন ও উত্তর পেয়েও অর্ধেক পড়ুয়াই পাশ করতে পারেনি। একজন তো কেমিস্ট্রিতে ৫ পেয়েছে।
সিবিআই জানিয়েছে, এই দুর্নীতিতে ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সি (এনটিএ)-র কোনও ভূমিকা ছিল কিনা, থাকলেও তা কী, সেটিই এখন দেখার। আপাতত তদন্তের একটা অংশ শেষ হয়েছে এবং বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের খোঁজ চলছে।