শেষ আপডেট: 16th July 2024 10:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভা ভোট চলাকালে অনেক রাজ্যেই বাছাই করা কয়েকজনকে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ-তে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র দিয়েছিল কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাতে অসম ও বাংলারও কয়েকজন ছিলেন। দরখাস্ত করার জন্য চালু হয়েছে বিশেষ অ্যাপ। কিন্তু মানুষ কতটা আগ্রহী এই আইন নিয়ে?
সোমবার পর্যন্ত অসমে মাত্র আটজন সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে ভারতের নাগরিকত্ব পেতে দরখাস্ত করেছেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র দু’জন সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদের মুখোমুখি হয়ে নথিপত্র পেশ করেছেন। বাকি ছয়জন দরখাস্ত করার পর আর আগ্রহ দেখাননি। সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা বলে নথিপত্র নিয়ে যাননি।
গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের একথা জানিয়েছেন স্বয়ং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যিনি স্বয়ং সিএএ বিরোধীদের মুণ্ডপাত করে দাবি করেছিলেন, এই আইন বহু মানুষের ভাগ্য বদলে দেবে।
কী অবস্থা পশ্চিমবঙ্গে? বিজেপির তরফে এই ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা, দাবিদাওয়া পেশ করার কাজে যুক্ত হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। তাঁর কথায়, সিএএ-তে নাগরিকত্ব পেতে যে সব শর্ত আরোপ করেছে তাতে ইচ্ছে থাকলেও নব্বইভাগের নাগরিকত্ব জুটবে না।
বিজেপি বিধায়কের বক্তব্য, বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানে জন্ম এবং বসবাসের কোনও না কোনও নথিপত্র না দেখাতে পারলে সিএএ-তে নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে না। দরখাস্ত ফেলে রাখা হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, চল্লিশ-পঁঞ্চাশ বছর আগে আসা মানুষ কী করে আগের দেশের নথি দেখাবে?
অসমের মুখ্যমন্ত্রী শর্মা বলেন, আমি বেশ কয়েকজন বাঙালি হিন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছিলাম কেন তাঁরা সিএএ-তে আবেদন করছেন না। তাঁরা আমাকে বলছেন, এই আইন তাঁদের কাজে আসবে বলে মনে করছেন না। আইন-আদালতে বিষয়টি উঠলে তাঁরা সেখানে ফয়সালা চান।
অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, যারা দরখাস্ত করেননি তাঁদের যাতে কোনওভাবে পুলিশ হেনস্থা না করে সে ব্যাপারে প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে। অনেকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা চলছে। তাঁদের বিরুদ্ধেও পুলিশকে সক্রিয় না হতে বলা হয়েছে। হিমন্ত বলেন, ট্রাইব্যুনাল হল বিচারালয়। সরকার ট্রাইব্যুনালের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। তবে ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা সিএএ নিয়ে অবহিত।
অসমে সিএএ আন্দোলনকারীদের একজনের বক্তব্য, মানুষ জেনে বুঝে নিজেকে বিদেশি প্রমাণ করতে কেন যাবেন! সিএএ-তে দরখাস্ত করার অর্থ নিজেকে বিদেশি মেনে নেওয়া। কেউ নথিপত্র দেখাতে না পারলে তিনি সরকারিভাবে বিদেশি বলে চিহ্নিত হবেন।
বাংলায় বিজেপির বিধায়ক অসীম সরকার বলেন, সিএএ নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অবগিত করা হয়েছে। আমরা দাবি করেছি, কেউ নিজেকে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত বলে লিখিত ঘোষণাপত্র জমা দিলেই তাঁকে নাগরিকত্ব দিতে হবে। বাংলাদেশের নথি সংগ্রহ করা এখন সম্ভব নয়।
সদ্য লোকসভা ভোটে সিএএ-কে হাতিয়ার করেই রানাঘাট ও বনগাঁ লোকসভা ফের দখল করে বিজেপি। কিন্তু লোকসভা ভোটের এক মাসের মাথায় অনুষ্ঠিত চার বিধানসভার ভোটে মতুয়া বহুল রানাঘাট দক্ষিণ ও বাগদায় বিপুল ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। উপনির্বাচনে সিএএ নিয়ে বিজেপির প্রচার দাগ কাটেনি মানুষের মনে।