শেষ আপডেট: 23rd July 2024 07:26
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রেল দুর্ঘটনার সংখ্যা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো (এনসিআরবি) বলছে, গত দশ বছরে স্রেফ রেল দুর্ঘটনাতেই প্রাণ হারিয়েছেন আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ! অথচ দেশের প্রধান যোগাযোগের মাধ্যম রেল। ফলে একের পর এক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটলেও চাইলেও সাধারণ মানুষের পক্ষে রেলের মতো গণপরিবহণ এড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব। সময়ের সঙ্গে প্রতিটি রুটে রেলযাত্রীর সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু যাত্রী সুরক্ষা কি বেড়েছে?
সাম্প্রতিক অতীতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের কাছে শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হোক কিংবা উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা, প্রতিটি ক্ষেত্রেই সামনে এসেছে যাত্রী সুরক্ষার প্রশ্ন। অভিযোগ উঠেছে, রেলের গাফিলতি নিয়ে।
এমন আবহে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাজেট (Budget Session 2024) অধিবেশন। ২৩ জুলাই, মঙ্গলবার বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এবারের বাজেটে অধিবেশনে ৬টি বিল পাস হওয়ার কথা। একই সঙ্গে সরকারের আগামী পাঁচ বছরের রূপরেখার আভাসও মিলবে। সেখানে রেলযাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে সত্যি কি কোনও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা শোনাবেন নির্মলা, কৌতূহলী সব মহল।
পরিসংখ্যানের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, গত বছর খানেকের মধ্যে বেশ কয়েকটি ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। সে বালেশ্বরের বাহানাগা বাজারের কাছে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস হোক কিংবা সদ্য ঘটা কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মালগাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ।
প্রতিবারই রেলের তরফে একটি যন্ত্র তথা প্রযুক্তির কথা বলা হয়েছে। তার নাম ‘কবচ’। যে যন্ত্র দুটি ট্রেনের মুখোমুখি সংঘাত বা পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারার মতো ঘটনা রুখে দেবে। সরকারের তরফে ঘটা করে তার প্রচারও করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে এখনও তার কোনও কার্যকারিতা দেখা যায়নি বলেই দাবি রেলযাত্রীদের। হলে অন্তত একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটত না বলেই মত তাঁদের।
সম্প্রতি কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর রেলের এই 'কবচ' নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অতীতে রেলমন্ত্রী থাকার সময়ে দুর্ঘটনা ঠেকাতে অ্যান্টি কলিউশন ডিভাইস লাগিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। "সেই ডিভাইস কোথায় গেল?" তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, রেলের অবস্থা শুধরোতে কোনও আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। শুধু বাইরে থেকে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। মমতার কথায়, “রেল এখন অনাথ হয়ে গেছে। আগের মতো শ্রী নেই। মাধুর্যও নেই। যাত্রী স্বাচ্ছন্দের ব্যাপারে কোনও খেয়ালই রাখা হয় না। যাঁরা দূরপাল্লার ট্রেনে যাতায়ত করেন, তাঁরাই বলেন, বেড লিনেন খুবই নোংরা”
পরিষেবা থেকে পরিকাঠামো, রেলকে নিয়ে হাজারও ক্ষোভ রয়েছে আমজনতার। রেলযাত্রীদের কথায়, "একথা ঠিক রেলের ভাড়া তুলনামূলকভাবে অনেক কম। প্রয়োজনে সেই ভাড়া কিছুটা বাড়ানো হোক, কিন্তু পরিষেবা, সুরক্ষা এবং পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে জোর দিক সরকার।"
যাত্রীদের দাবি পূরণে এবারের বাজেটে রেলকে ঘিরে সরকার সত্যি নতুন কোনও দিশা দেখাবে নাকি সেই 'গয়ংগচ্ছ' মনোভাবের বর্হিপ্রকাশ ধরা পড়বে, স্পষ্ট হবে আর কিছুক্ষণ পরেই।