বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরেন ওই জওয়ান। সূত্রের খবর, নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার পরই স্ত্রী রজনীকে ভিডিও কল করেছিলেন।
পূর্ণম এবং তাঁর স্ত্রী
শেষ আপডেট: 14 May 2025 14:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহেলগামের জঙ্গিহানার ঘটনার (Pahalgam Attack) পর জঙ্গি নিধনে কড়া পদক্ষেপ শুরু করে ভারত। সীমান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। এরই মধ্যে 'ভুল করে' পাঞ্জাবের আন্তর্জাতিক সীমান্ত টপকে যান বাংলার বাসিন্দা বিএসএফের (BSF Jawan) ১৮২ নং ব্যাটেলিয়নের সদস্য কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাউ (PK Shaw)। তাঁকে আটক করে পাক রেঞ্জার্সরা। সেই ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর বুধবার ভারতে ফেরেন ওই জওয়ান। আর কর্মস্থলে পৌঁছেই আগে ফোন করেন স্ত্রীকে। ভিডিও কলে (Video Call) বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন তাঁরা।
স্বামী পাক সেনার হাতে আটক হয়েছেন এই খবর শুনে মাথায় বাজ পড়েছিল রজনীর। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই তিনি ছুটেছিলেন হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায় বিএসএফের দফতরে। গিয়েছেন স্বামীর কর্মস্থলেও। কিন্তু অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না তাঁর। এদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আলাদা করে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিএসএফ জওয়ানকে যাতে দ্রুত বাড়ি ফেরানো যায়, সেই নিয়ে উদ্যোগী হয়েছিলেন তিনি। বুধবার প্রায় ২৩ দিনের মাথায় পাকিস্তানের কবল থেকে মুক্ত হয়েছেন পিকে সাউ।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ফেরেন ওই জওয়ান। সূত্রের খবর, নিজের কর্মস্থলে যাওয়ার পরই স্ত্রী রজনীকে ভিডিও কল করেছিলেন পিকে। স্বাভাবিকভাবেই কথা বলতে গিয়ে দুজনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে সংবাদমাধ্যমে রজনী জানান, 'একমুখ দাড়ি হয়ে গেছে দেখলাম। আমাকে বলল টেনশন না করতে। ও ঠিক আছে। দাড়ি কাটতে হবে তাই পরে কথা বলবে।' রজনী এও জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে ফোন করেছিলেন। খোঁজখবর নিয়েছেন।
ভুলবশত সেনা জওয়ান বা সাধারণ মানুষের সীমান্ত পেরনোর ঘটনা আগেও হয়েছে। প্রোটোকল অনুযায়ী, ফ্ল্যাগ বৈঠকের পর এমন সমস্যার সমাধান হয়। আটক করা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে, কাশ্মীরের পহেলগামের কাণ্ডের পর পাকিস্তানের প্রতি কঠোর অবস্থান নেয় ভারত। পাল্টা হুঁশিয়ারি দেয় পাকিস্তানও। দুই দেশের মধ্যে কার্যত যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই জওয়ানের মুক্তি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। তবে বুধবার সব সংশয় দূর হয়েছে।
আসলে জওয়ানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে তিনবার ফ্ল্যাগ মিটিং করেছিল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BSF)। তবে সমাধান সূত্র বের হয়নি। কিন্তু সামরিক প্রতিরোধ বজায় রাখার পাশাপাশি কূটনৈতিক আলোচনাও জারি রেখেছিল নয়াদিল্লি। তারই ফল মিলল এতদিন পর। অবশেষে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেন।