শেষ আপডেট: 4 May 2025 19:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্রিটিশ মিউজিয়ামে (British Museum) থাকা কোহিনুর হিরে (Kohinoor Diamond) ফেরাতে বারবার উদ্যোগী হয়েছে ভারত। নয়াদিল্লি (Delhi) এবং লন্ডনের (London) ভারতীয় দূতাবাসের তরফে এর জন্য কূটনৈতিক তোড়জোড় কম হয়নি। ঐতিহাসিক এই হিরে ভবিষ্যৎ নিয়ে আবারও আলোচনার ঝড় উঠেছে। ব্রিটেনের সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া মন্ত্রী লিসা নন্দীর (Lisa Nandy) সাম্প্রতিক মন্তব্যে নতুন করে আশার আলো দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি দিল্লি সফরে এসে লিসা জানিয়েছেন, "আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি, যাতে দু'দেশের মানুষই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সুফল ভোগ করতে পারে।" যদিও কোহিনুর ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কোনও প্রতিশ্রুতি দেননি। তবে তাঁর এহেন বক্তব্যে ভারতের জনগণের মধ্যে নতুন করে আশার আলো দেখা দিয়েছে।
লিসা আরও জানিয়েছেন, "ভারত ও ব্রিটেন চলচ্চিত্র, ফ্যাশন, টেলিভিশন, সঙ্গীত ও গেমিং শিল্পে যৌথভাবে কাজ করার পরিকল্পনা করছে। ব্রিটেনের সায়েন্স মিউজিয়াম গ্রুপ ভারতের ন্যাশনাল সায়েন্স মিউজিয়াম গোষ্ঠীর সঙ্গে যৌথ প্রদর্শনী এবং সংগ্রহশালা নিয়ে কাজ চালাচ্ছে।
১০৫.৬ মেট্রিক ক্যারাটের এই হিরের ওজন ২১.৬ গ্রাম। ১১০০ থেকে ১৩০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুরের কাছে কল্লুর খনি থেকে পাওয়া গিয়েছিল এই হিরে। ১৩১০ সালে কাকোতীয় বংশের সঙ্গে বরঙ্গলের যুদ্ধে এই হিরে দখল করেন দিল্লির সুলতান আলাউদ্দিন খিলজি। পরে তা হাতবদল হয়ে আসে মুঘল দরবারে। 'বাবরনামা'য় উল্লেখ রয়েছে, ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপথের যুদ্ধে তা বাবরের দখলে আসে।
এরপর এ হাত ও হাত হয়ে জায়গা হয় ইংল্যান্ডে। শোনা যায় সেখানকার বাকিংহাম প্রাসাদে দলীপ সিংহের কাছ থেকে ব্যক্তিগত অনুরোধের মাধ্যমে এই কোহিনুর হিরে উপহার হিসেবে নিয়েছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া। যদিও বিষয়টি যে আদ্যন্ত সাজানো ঘটনা ছিল, সে কথা বিভিন্ন সময় স্বীকার করেছেন ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরাও। এর পরেই নিজের রাজমুকুটে কোহিনুর বসিয়েছিলেন রানি ভিক্টোরিয়া।
পরবর্তী কালে এই হিরে দেশে ফেরানোর অনেক চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। লিসার কথা অনুযায়ী, এই নতুন উদ্যোগ ভারতের দাবিকে নতুন গতি দিতে পারে। এখন দেখার, বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এই অমূল্য রতন কবে নিজের জন্মভূমে ফিরে আসে।