শেষ আপডেট: 13th September 2024 10:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাড়ির গণেশ পুজোয় অংশ নেওয়ায় বিরোধীদের সম্মিলীত সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, দু’জন সাংবিধানিক প্রধানের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগদান কাঙ্খিত নয়, যেখানে শুধুই প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত ছিলেন।
মহারাষ্ট্রে উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা রীতিমত সন্দেহ প্রকাশ করেছে রাজ্যের রাজনৈতিক মামলাগুলিকে দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি একান্তে কথা বলেছেন। রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে মামলাগুলির পরিণতি গুরুত্বপূর্ণ। দলের নেতা সঞ্জয় রাউতের পর রাজ্যসভার সাংসদ প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও মোদীর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতো বিজেপি এই ব্যাপারেও অতীতকে অস্ত্র করেছে। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে নিজের সরকারি বাসভবনে ইফতার পার্টির আয়োজন করেছিলেন মনমোহন সিং। তাঁর অফিস সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি কেজি বালাকৃষ্ণাণকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে মনমোহনের সঙ্গে বালাকৃষ্ণাণের সৌজন্য বিনিময়ের একটি ছবি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে বিজেপির মুখপাত্র শেহজান পুনাওয়ালা প্রশ্ন তুলেছেন, এই সময় তো বিরোধীরা প্রশ্ন তোলেননি কেন প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি গিয়েছিলেন।
বিজেপির আর এক জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রশ্ন তুলেছেন, রাষ্ট্রের দুটি কাঠামোর মধ্যে কি বিবাদের সম্পর্ক। কেন প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির বাড়ির গণেশ পুজোয় অংশ নিতে পারবেন না! সৌজন্য বলে কিছু কি থাকবে না?
মোদীর পক্ষ নিয়ে বিজেপি নেতারা গণেশ মাহাত্মেও মেতেছেন। তাঁদের বক্তব্য, গণেশ ‘শুভ’-র প্রতীক। সম্বিত মার্কিন সফরে রাহুল গান্ধীর ভারত বিরোধী বলে পরিচিত সেনেট সদস্য ইহাম ওমরের সঙ্গে ছবি তোলার প্রসঙ্গ টেনেছেন। বলেন, রাহুল গান্ধী এমন একজন ব্যক্তির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে পারেন, অথচ, প্রধানমন্ত্রী আর প্রধান বিচারপতি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গণেশ বন্দনা করলে আপত্তি তোলা হচ্ছে।
মনমোহনের বাড়িতে ইফতার পার্টি নিয়ে বিরোধীরা অবশ্য বিজেপিকে পাল্টা জবাব দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, মনমোহন সিং ইফতার পার্টি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এবং নিজের সরকারি বাসভবনে। ওই অনুষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও সম্পর্ক ছিল না। তাছাড়া এই ধরনের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের তালিকাও প্রধানমন্ত্রী স্থির করেন না। তালিকা তৈরিই থাকে। তাতে দেশের প্রধান বিচারপতির নাম উপরের দিকে থাকে। অটল বিহারী বাজপেয়ীও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে সরকারি বাসভবনে ইফতার পার্টির আয়োজন করতেন। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তা বন্ধ করে দেন।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাজনৈতিক দলগুলি প্রধান বিচারপতিকে খুব একটা বিতর্কে জড়ায়নি। যদিও প্রধানমন্ত্রীকে তিনিই আমন্ত্রণ করেছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী কপিস সিব্বল বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি কোনও ভুল করেননি। ভুল করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রধান বিচারপতির বাড়ির অনুষ্ঠানে যোগদানের ছবি প্রকাশ্যে এনে প্রশ্ন উসকে দিয়েছেন।