শেষ আপডেট: 18th April 2024 15:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তারিখ পে তারিখ, তারিখ পে তারিখ...। মহিলা কুস্তিগিরদের যৌন হেনস্তার দিন ভারতেই ছিলেন না বলে বৃহস্পতিবার আদালতে নতুন আবেদন জমা দিলেন জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন বিতর্কিত সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিং। আর সেই সঙ্গেই এদিন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে বিজেপির বাহুবলি সাংসদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন পিছিয়ে গেল।
মহিলা কুস্তিগিররা ফেডারেশন সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে উঠতি প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছিলেন। যা নিয়ে সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগট, বজরং পুনিয়ার মতো আন্তর্জাতিক পদকজয়ী কুস্তিগিররা দিল্লির যন্তরমন্তরে ধরনায় বসেছিলেন। যা নিয়ে গোটা দেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল। পরে চাপের মুখে বিজেপি ফেডারেশন সভাপতির পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু, ওই পদে নিজেরই ঘনিষ্ঠকে বসান ব্রিজভূষণ।
এই বিতর্কের জেরেই উত্তরপ্রদেশের দুটি কেন্দ্রে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। তার একটি হল রায়বেরিলি এবং দ্বিতীয়টি হল ব্রিজভূষণের কেন্দ্র কৈসরগঞ্জ। তাঁকে এখনও টিকিট না দেওয়ার বিষয়ে কৈসরগঞ্জের বিজেপি সাংসদ রামচরিতমানসের পংক্তি উল্লেখ করে বলেন, 'হোইয়ে ওহি জো রাম রচি রাখা।' অর্থাৎ রামের যা ইচ্ছা, তাই হবে।
এদিন দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে ব্রিজভূষণ নতুন আবেদনে বলেন, চার্জ গঠনের বিষয়টি যেন পুনর্বিবেচনা করা হয়। কারণ, ২০২২ সালের ৭ সেপ্টেম্বর, যেদিন যৌন হেনস্তার অভিযোগ ওঠে, সেদিন তিনি কুস্তি ফেডারেশনের অফিস কেন দেশেই ছিলেন না। এরপরেই আদালত ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত চার্জ গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কিনা তা পিছিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে ৬ মহিলা কুস্তিগির যৌন হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু, তাঁর দাবি ওইদিন তিনি ভারতেই ছিলেন না। বিজেপি বাহুবলির আইনজীবী আদালতে এও বলেন যে, দিল্লি পুলিশ তাদের অভিযোগে ফোনের কল ডিটেলস রেকর্ড দেয়নি।
দিল্লির পুলিশের আইনজীবী এটাকে মামলার গতি শ্লথ করে দেওয়ার কৌশল বলে উল্লেখ করে আবেদনের বিরোধিতা করেন। অনেক দেরি করে এই আবেদন করা হয়েছে এবং আরও দেরি করানোর জন্য পুনর্তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। যদিও অতিরিক্ত মুখ্য মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়ঙ্কা রাজপুত নির্দেশ পিছিয়ে দিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত শুনানি করে দেন।
প্রসঙ্গত, বুধবারই কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে অবিচারের প্রতিবাদী মুখ কুস্তিগির সাক্ষী মালিককে ১০০ জন প্রভাবশালীর তালিকায় স্থান দিয়েছে টাইম পত্রিকা। বিশ্বের শীর্ষ প্রভাবশালীদের এই তালিকায় সাক্ষী মালিকের নাম থাকায় স্বভাবতই আরও চাপে পড়ে যান কুস্তি ফেডারেশনের প্রাক্তন সভাপতি, বিজেপির বাহুবলি নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিং।
ভারতীয় কুস্তিতে মহিলা কুস্তিগিরদের উপর যৌন হেনস্তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সাক্ষী মালিকসহ বিনেশ ফোগট এবং বজরং পুনিয়ার মতো ক্রীড়াবিদরা। বিশেষত সাক্ষীর লড়াই ছিল এমন একজনের বিরুদ্ধে যিনি বিজেপির বাহুবলি নেতা ব্রিজভূষণ শরণ সিং। ব্রিজভূষণ সেই সময় জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। শুধু তাই নয়, সাংসদও বটে।
এহেন অসম প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিরুদ্ধে দিল্লির রাস্তায় বসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন গড়ে তোলেন দেশের পদকজয়ী ক্রীড়াবিদরা। তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন করে কংগ্রেস সহ বহু বিরোধী দলনেতারা পাশে দাঁড়ান।