শেষ আপডেট: 10th March 2025 16:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিহারের এক বিজেপি বিধায়ক হোলির দিন মুসলিমদের ঘরে বসে থাকার নিদান দিলেন। উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই উত্তরপ্রদেশের সম্ভল পুলিশের সার্কল অফিসারও বলেছিলেন, হোলি নিয়ে যদি কারও সমস্যা থাকে, তাহলে তিনি ঘরে বসে থাকতে পারেন ওইদিন। সোমবার তা নিয়ে তোলপাড় চলল রাজ্য রাজনীতিতে।
বিহারে আইনশৃঙ্খলা কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল দল সহ সব কটি বিরোধী দল। রমজান মাসের রোজা রাখার সময় জুম্মাবারে এ বছর হোলি পড়েছে। তা নিয়ে দেশের প্রায় সব রাজ্যই কমবেশি উদ্বিগ্ন রয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন অতিরিক্ত নিরাপত্তার আয়োজন করছে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে। এরই মাঝে বিজেপি বিধায়কের মুখে আগামী শুক্রবার হোলির দিন মুসলিমদের 'ঘরে বসে' থাকার 'আবেদন' নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা হতে শুরু করে।
বিহারের মধুবনী জেলার বিসফি বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক হরিভূষণ ঠাকুর বাচৌল বলেছেন, বছরে মোট ৫২টি জুম্মা বার (শুক্রবার) পড়ে। তার মধ্যে একটি হোলির দিন পড়েছে। মুসলিমদের কাছে আমার আবেদন, তারা যেন এইদিনটি হিন্দুদের উৎসব পালনের সুযোগ করে দেয়। যদি মুসলিমদের উপর কেউ রং ছোড়ে তাহলে যেন অসন্তুষ্ট না হন। যদি তাঁদের গায়ে রং লাগাতে আপত্তি থাকে, আমার অনুরোধ তাঁরা যেন ওইদিন ঘরে বসে থাকেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এটা অত্যন্ত জরুরি।
ঠাকুরের কাছে রোজা পালন এবং বিশেষ নমাজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তাঁর জবাব, ওরা সবসময় দুমুখো নীতি নিয়ে চলে। আবির-গুলালের (রং ও আবির) দোকান খুলে টাকা রোজগার করতে ওদের বাধে না। বরং হাসিখুশি দোকান বসায় অতিরিক্ত রোজগারের আশায়। অন্যদিকে, একফোঁটা রং যদি কেউ ওদের গায়ে ছেটায় ওদের তখন দোজখের (নরক) ভয় মনে চাপে, বলেন বিজেপি বিধায়ক।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব এ ব্যাপারে বলেন, এই বিজেপি বিধায়ক কে যিনি মুসলিমদের ঘর থেকে বেরতে নিষেধ করছেন। কী করে একজন বিধায়ক এরকম কথা বলতে পারেন? মুখ্যমন্ত্রী কোথায়? মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষমতা আছে, এই বিধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার? এটা সেই দেশ যেখানে রাম ও রহিমকে লোকে একসঙ্গে বিশ্বাস করে। এটা বিহার। এখানে একটিও মুসলিম ভাইকে রক্ষা করতে ৫-৬ জন হিন্দু ভাই এগিয়ে আসবেন।
কংগ্রেসের বিধায়ক আনন্দ শঙ্কর বলেছেন, প্রাচীনকালে পুজো, যাগযজ্ঞে যেমন ভূতপ্রেত, দৈত্যিদানোরা যজ্ঞ পণ্ড করত, তেমনই এ যুগে বিজেপির এইসব লোক উৎসবের ব্যাপারে নাক গলায়। ওরা ধর্ম, জাতির ভিত্তিতে রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষে মানুষে বিভাজন করতে চায়। দেশে সংবিধান বলে একটা বস্তু আছে, যাকে মান্যতা দিলে এরকম কথা বলা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি যেন এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।