শেষ আপডেট: 24th February 2024 11:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অসমে মুসলিমদের বিয়ে নথিভুক্তির ১৯৩৫ সালে তৈরি আইন ‘অসম মুসলিম ম্যারেজেস অ্যান্ড রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট’ বাতিল করে দিল রাজ্যের বিজেপি সরকার। শুক্রবার বেশি রাতে বসেছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। সেখানেই এই আইন বাতিল করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, বিয়ে নিবন্ধন আইনে ধর্ম নির্বিশেষে ন্যুনতম বয়সে সমতা আনা হবে। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, অসম সরকারের এই পদক্ষেপ অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। পুরোপুরি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার কথা আগেই জানিয়ে রেখেছেন বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
অসমে নাবালিকাদের বিয়ে আটকাকে বর্তমান সরকার গোড়া থেকেই সচেষ্ট। সেই অভিযানের অংশ হিসাবে ব্রিটিশ আমলের আইনটি বাতিল করা হল। তাতে ছেলে ও মেয়েদের যথাক্রমে ২১ এবং ১৮ বছরের কম বয়সিদের বিয়ে নথিভুক্ত করার বিধান ছিল। অসম সরকার গত দু’ বছর ধরে নাবালিকা বিয়ে বন্ধ করতে অভিযান চালাচ্ছে।
সেই অভিযানে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় ৩,৪৮৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৪,৫১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। সেই বছর অক্টোবরে দ্বিতীয় অভিযানে গ্রেফতার করা হয় ৯১৫জনকে। মামলা দায়ের হয় ৭১০ জনের বিরুদ্ধে।
ধৃতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, নাবালিকাদের অনেকেরই বিয়ে মুসলিম ম্যারেজ আইনে নথিভুক্ত করা আছে। ফলে আইনত তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নিয়ে পারেনি। অসম সরকার গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছিল, রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে নাবালিকা বিয়েতেও রাশ টানা দরকার। তাছাড়া, অল্প বয়সে মা হওয়ার ফলে বহু মহিলা অকালে গুরুতর রোগভোগের শিকার হচ্ছেন। মারাও যাচ্ছেন অনেকে। কমিটির সুপারিশ মেনে অভিযানের সিদ্ধান্ত করে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা বেশি রাতে এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন, বর্তমান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বিতর্কিত আইনটিই বাতিলের সিদ্ধান্ত করেছে সরকার। রাজ্যে যে ৯৪জন মুসলিম ম্যারেজ রেজিস্ট্রার আছেন, সরকার তাদের এককালীন দু লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে। নতুন করে মুসলিম ম্যারেজ আইন চালু করবে সরকার। তাতে সরকার নির্ধারিত বিয়ের বয়সের সীমা রক্ষা করা বাধ্যতামূলক হবে। অর্থাৎ মেয়েদের ১৮ এবং ছেলেদের ২১ বছর বিয়ের ন্যূনতম বয়স।