শেষ আপডেট: 8th October 2024 14:50
দ্য ওয়াল ব্যুরো: একেই বলে নিজের নাক কেটে অপরের যাত্রাভঙ্গ। হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের ফলাফলের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে ৯০ আসনের মধ্যে এখনও একটিতেও খাতা খুলতে পারেনি আম আদমি পার্টি। যদিও পুরো ফলাফল সামনে আসতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু আপাতত ট্রেন্ড যেদিকে এগোচ্ছে তা দেখেই পরিষ্কার আপের ছোট্ট ভুলে বড় খেসারত দিতে হল কংগ্রেসকেই।
ট্রেন্ড যেদিকে এগোচ্ছে তাতেই স্পষ্ট ফের হরিয়ানা বিধানসভা দখল বিজেপির কাছে শুধু সময়ের অপেক্ষা। নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখনও পর্যন্ত ৯০ বিধানসভার ৫১ আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, ৩৩ আসনে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস, ইতিমধ্যে জিতেছে একটি আসনে। বহুজন সমাজ পার্টি ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল লোক দল দুজনেই একটি করে আসনে এগিয়ে রয়েছে। নির্দল প্রার্থীরা এগিয়ে রয়েছেন একটি আসনে।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে প্রথমেই ছিটকে গিয়েছে, আম আদমি পার্টি ও হরিয়ানা জনসেবক পার্টি। এবারের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে সব শক্তি নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল আম আদমি পার্টি। ৯০ আসনের মধ্যে ৮৮টিতে প্রার্থী দিয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। কিন্তু বেলা গড়াতেই পরিষ্কার গণনায় দৃশ্যত কোনও প্রভাব ফেলতে পারল না তারা। কোনও আসনেই এগিয়ে নেই আম আদমি পার্টি।
এদিন ফল বেরোতেই আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, 'অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফল।' এদিনের ফলাফল আমাদের কাছে 'বড় অধ্যায়'। আপ প্রধানের অভিযোগ, নির্বাচনকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার খেসারত দিতে হয়েছে দলকে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, ভোটের আগে রাহুল গান্ধী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে হাতে হাত ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু শেষমেশ আপ প্রধানের ইচ্ছে না থাকায় সেই সম্ভাবনা প্রথমেই ধাক্কা খেয়েছিল। অনেক আশা নিয়ে ৯০ আসনের মধ্যে একার ক্ষমতায় ৮৮ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল আপ। দিল্লি ও পাঞ্জাবে সরকার চালালেও হরিয়ানায় কোনও দিশা দেখাতে পারল না কেজরিওয়ালের দল।
কিন্তু দিনশেষে দেখা গেল অরবিন্দ কেজরিওয়াল হাঁকডাক করলেও লাভের লাভ তো হলই না। উল্টে বেশ কিছুটা ভোট কেটে পাল্টা বিজেপিকেই সুবিধা করে দিল কেজরিওয়ালের দল।
শনিবারই ভোটাভুটি হয়েছিল হরিয়ানা বিধানসভায়। তার আগে থেকেই একাধিক সংবাদমাধ্যমে খবর অনুযায়ী বিজেপি যে খুব ভালো অবস্থায় ছিল তা বলা যাবে না। কারণ ভোটের আগেই এক ধাক্কায় দলবিরোধী কাজের জন্য মোট ৮ প্রার্থীকে দল থেকে বহিষ্কার করে নায়েব সিং সাইনির সরকার।
রাজনৈতিক মহলের ধারণা, প্রথমত চালে সবচেয়ে বড় ভুল বিরোধীরা জোট না করে একলা চলোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায়। যাতে লাভের অংশের সিংহভাগ বিজেপির পকেটে ঢুকেছে। গণনার শুরু থেকে কংগ্রেস বেশ কয়েকটি আসনে এগিয়ে থাকলেও সময় যত গড়িয়েছে বিরোধীদের পিছনে ফেলে তড়তড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির।
হরিয়ানায় টানা তৃতীয়বার বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর, রাজ্যজুড়ে বিজয় সমারোহ পালনের পরিকল্পনা করছে রাজ্য বিজেপি। পাশাপাশি, জম্মু-কাশ্মীরেও অসাধারণ সাফল্য অর্জন করায় দলীয় কর্মীদের উচ্ছ্বাস তুঙ্গে। সমস্ত জেলা কার্যালয়ে উৎসবের আয়োজন করা হবে, যেখানে দলের নেতৃবৃন্দ এবং কর্মীরা এই ঐতিহাসিক জয়ের স্মরণে বিজয় সমাবেশ করবেন।
পিছিয়ে পড়েও কংগ্রেসের পাল্টা দাবি, সময় গড়ালে পাশা উল্টে যাবে। কংগ্রেস নেতাদের মতে, নির্বাচন কমিশনের ডেটা আপডেট করা হচ্ছে না। প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে দেরিতে তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। পুরো ফলাফল বেরতে এখনও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতেই হবে কিন্তু বিরোধীদের সব অঙ্ক মিথ্যা প্রমানিত করে ফের সরকার গড়তে চলেছে বিজেপিই।