শেষ আপডেট: 10th June 2024 14:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এবারে আর মন্ত্রিসভার উপর একচ্ছত্র আধিপত্য নেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অনেক ক্ষেত্রেই এনডিএ শরিকদের কাঁধে ভর দিয়ে সরকার চালাতে হবে। ক্যাবিনেট পর্যায় ও প্রতিমন্ত্রী নির্বাচন যেনতেন ভাবে করে ফেললেও কে হতে চলেছেন অষ্টাদশ লোকসভার অধ্যক্ষ বা চলিত কথায় স্পিকার? কারণ, লোকসভার স্পিকার পদটি শুধু গুরুত্বের ক্ষেত্রেই নয়, ক্ষমতার পরিধিতেও অনেক বিস্তৃত।
তবে এবার এই পদটি কি শেষপর্যন্ত বিজেপির ওম বিড়লার হাতেই থাকবে! নাকি শরিকদের কেউ দাবিদার হয়ে উঠতে চলেছে। রাজধানীর অন্দর মহলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে যে, এন চন্দ্রবাবু নাইডুর তেলুগু দেশম পার্টি স্পিকার পদের জন্য নাছোড়বান্দা। বিজেপি নেতৃত্ব সহ মোদীর কাছেও তারা জানিয়ে দিয়েছে স্পিকার পদ ছাড়াছাড়ি নেই।
তবে এখানেও একটা প্রশ্ন রয়েছে, দেশম পার্টি স্পিকার পদে দাবি জানালেও কাকে করা হবে সেই মুখ? বিশেষত ১৬ জন এমপির মধ্যে অধিকাংশই নতুন মুখ। সূত্রে জানা গিয়েছে, এনডিএ এবং শেষপর্যন্ত বিজেপি যদি সত্যিই টিডিপিকে স্পিকার পদ ছাড়ে তাহলে চন্দ্রবাবু নাইডু তাঁর বিশ্বস্ত রামমোহন নাইডুকে বেছে নিতে পারেন। রামমোহন এই নিয়ে পরপর তিনবার লোকসভা ভোটে জিতলেন। তিনি হিন্দি এবং ইংরেজিতে প্রাঞ্জল ভাষণ দিতে পারেন। আবার প্রথমবার নির্বাচিত হলেও গুন্টুরের এমপি পেম্মাসানি চন্দ্রশেখরকেও তাঁর যোগ্যতা অনুসারে বাছাই করতে পারে দল।
প্রথম ও দ্বিতীয় মোদী সরকার শপথ নিয়েছিল ফলপ্রকাশের ১০ ও ৭ দিনের মাথায়। এবারে পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে আলোচনা করতে হয়েছে শরিকদের সঙ্গে। শুধু তাই নয়, মিলেমিশে খাওয়ার নীতিও নিতে হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডু এবং বিহারের নীতীশ কুমারের দল মন্ত্রিত্ব ছাড়াও ওঁত পেতে রয়েছে স্পিকার পদের দিকে। যদিও বিজেপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, লোকসভার অধ্যক্ষ পদ তারা ছাড়বে না।
সংবিধান অনুসারে লোকসভার প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি একজনকে প্রোটেম স্পিকার হিসেবে কাজ চালানোর নির্দেশ দেন। তিনিই সমস্ত এমপিকে শপথবাক্য পাঠ করান। তারপর সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় একজনকে স্পিকার নির্বাচন করা হয়। যেমন গত দুই লোকসভায় বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় সুমিত্রা মহাজন এবং ওম বিড়লা স্পিকার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবার কিন্তু পরিস্থিতিতে খানিক বদল এসেছে। কারণ, ২৭২ পার করতে হলে এনডিএ শরিকদের কাছে হাত পেতে ভোট চাইতে হবে বিজেপিকে।
লোকসভার স্পিকার পদের দিকে সকলের নজর কেন? আসলে এই পদটি একটি কৌশলী ক্ষমতা। লোকসভা পরিচালনার যাবতীয় দায়িত্ব ও নিয়ন্ত্রণ থাকে স্পিকারের হাতে। অধ্যক্ষকে হতে হয় নিরপেক্ষ ও দলমতনির্বিশেষে সমমনোভাবাপন্ন। কিন্তু, নিম্নকক্ষে কোন দল কতক্ষণ বলার সুযোগ পাবে, বা কাকে কীভাবে পরিচালনা করতে হবে এরকম বেশ কয়েকটি নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অধ্যক্ষ পদের হাতে আছে।
সাম্প্রতিক কয়েকটি রাজ্যে দেখা গিয়েছে, শাসকদলের মধ্যে বিদ্রোহ ঘটিয়ে দল ভাঙানোর খেলা হয়েছে। এন চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নীতীশ কুমার যেহেতু দীর্ঘদিন রাজনীতি করে চুল পাকিয়েছেন, তাই একপ্রকার নিজেদের 'বিমা' করিয়ে রাখতে স্পিকার পদের বায়না ধরেছেন। কারণ, দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগের একচ্ছত্র ক্ষমতা রয়েছে স্পিকারের হাতে। চেয়ারম্যান অথবা স্পিকারের হাতেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতা রয়েছে দলত্যাগের আইন প্রয়োগ করে এমপিদের সদস্যপদ খারিজ করার।