রেডিট ব্যবহারকারীর আরও অভিযোগ, নিখিলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলেন ম্যানেজার।
নিখিল সোমবংশী (ছবি-গুগল)
শেষ আপডেট: 19 May 2025 07:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ফের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার এক কর্মীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। চলতি মাসের শুরুতেই বেঙ্গালুরুর আগরা লেকের কাছে ২৫ বছর বয়সি ইঞ্জিনিয়ার নিখিল সোমবংশীর দেহ উদ্ধার হয় (Bengaluru Techie Found Dead)। তাঁর মৃত্যুর প্রায় দু'সপ্তাহ পর সহকর্মীদেরই অভিযোগ, অফিসের 'টক্সিক' কর্মসংস্কৃতির কারণেই আত্মহত্যা করেছেন নিখিল।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৮ মে আগরা লেকের কাছে একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তদন্ত শুরু হলে তাঁর পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হয়েছিল, ওই যুবক আত্মঘাতী হয়েছেন। এই ঘটনার দু'সপ্তাহ পরে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট সামনে আসে।
রেডিট পোস্টে 'কিরগাওয়াকুটজো' নামে এক ব্যবহারকারীর অভিযোগ, মি: পানুগান্তি নতুন নিয়োগ হওয়া কর্মীদের সঙ্গে অত্যন্ত রূঢ়ভাবে কথা বলতেন। তাঁদের ওপর কাজের বোঝা চাপিয়ে দিতেন এবং অফিসে সম্পূর্ণভাবে টক্সিক পরিবেশ তৈরি করতেন যার ফলে একাধিক কর্মী চাকরি ছেড়েছেন।
২০২৪ সালে বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন নিখিল। গত বছরই বেঙ্গালুরুর 'ক্রুট্রিম' নামের সংস্থায় মেশিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেছিলেন। অভিযোগ, কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকেই নিখিলের উপর চাপ সৃষ্টি করা হত। উর্ধ্বতনেরা প্রায়ই অকথ্য ভাষায় কথা বলতেন। অনেকে চাকরি ছাড়লেও নিখিল কাজ করছিলেন।
তরুণের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, 'ঘটনার সময় নিখিল ছুটিতে ছিলেন।' ইমেল মারফত ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা (Tech Company) আরও জানিয়েছে, 'এপ্রিলের ৮ তারিখ নিখিল ম্যানেজারকে জানিয়েছিলেন তাঁর বিশ্রাম প্রয়োজন এবং ব্যক্তিগত কারণেও কয়েকদিনের ছুটি নিতে চান। ১৭ এপ্রিল তাঁর অনুরোধে ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হয়।'
রেডিট ব্যবহারকারীর আরও অভিযোগ, নিখিলের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই অন্যান্য কর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছিলেন ম্যানেজার। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক 'ক্রুট্রিম'-এর কর্মী সমাজমাধ্যমে লেখেন, দীর্ঘদিন ধরেই কর্মীদের প্রতি অকথ্য ভাষা ব্যবহার করছেন ওই ম্যানেজার। কর্তৃপক্ষকে জানালে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ।
গত বছর আগস্ট মাসে পুনের এক বহুজাতিক সংস্থার কর্মরত চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বছর ছাব্বিশের অ্যানা সেবাস্টিয়ানের মৃত্যুতে বিতর্ক শুরু হয়েছিল নানা মহলে। সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে চিঠিও লেখেন মৃতার মা। ওই ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। কর্মচারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিয়ে কাজের পরিবেশ বদলের ডাক দিয়েছিল ওয়াকিবহাল মহল। এরপরও পরিস্থিতির পরিবর্তন হল না। 'টক্সিক ওয়ার্ক কালচার' (Toxic Work Culture) কেড়ে নিল আরও একটি তরতাজা প্রাণ।