শেষ আপডেট: 11th December 2024 12:37
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্ত্রী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে, ২৪ পাতার নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন বেঙ্গালুরুর ইঞ্জিনিয়ার অতুল সুভাষ। তাঁর সুইসাইড নোট থেকে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। স্ত্রী নিকিতা খুন সহ একাধিক ভুয়ো মামলা দায়ের করেছিলেন অতুলের বিরুদ্ধে। তার জন্য তাঁকে কয়েক মাসে অন্তত ৪০ বার বেঙ্গালুরু থেকে জৌনপুর যাতায়াত করতে হয়েছে।
অতুলের সুইসাইড নোট থেকে তথ্য মিলেছে, আদালতে মামলা চলাকালীন অতুলের স্ত্রী নাকি তাঁকে আত্মহত্যা করার 'পরামর্শ' দিয়েছিলেন। ভরা আদালতের বিচারকের সামনেই নাকি নিকিতা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, 'তুমিও সুইসাইড করছো না কেন?' কেন আচমকা এই কথা বলেছিলেন নিকিতা, সেই কথাও নিজের সুইসাইড নোটে লিখে রেখে গেছেন অতুল। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর যে মানসিক অত্যাচার হয়েছে তার জন্য দেশের বিচারব্যবস্থাকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন তিনি।
অতুল জানিয়েছেন, আদালতে মামলা চলাকালীন অতুল বিচারককে বলেছিলেন, 'এই ধরনের ভুয়ো মামলার জন্য দেশে অনেক ছেলেরা আত্মহত্যা করছে।' এই কথা শুনেই নাকি তাঁর স্ত্রী ওই প্রশ্ন করে তাঁকে খোঁচা দিয়েছিল। শুধু তাই নয়, নিকিতার কথা শুনে বিচারক নাকি হেসেছিলেন এবং শান্তভাবেই তাঁকে এজলাস থেকে চলে যেতে বলেছিলেন। পরে পরিবারের কথা ভেবে সব মিটমাট করিয়ে নিতে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন ওই বিচারক বলে সুইসাইড নোটে জানিয়েছেন অতুল।
সুইসাইড নোটে অতুল দাবি করেছেন, ১০ লক্ষ টাকা পণ চাওয়ার জন্য তাঁর বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন নিকিতা। এই দাবি সম্পূর্ণ মিথ্যে ছিল। পরে নাকি নিকিতা সত্যি স্বীকারও করে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা সহ আরও একাধিক অভিযোগ তুলে ভুয়ো মামলা দায়ের করা হয়। অতুলের ভাই বিকাশের দাবি, তাঁর দাদা বলত দেশে সব আইন মেয়েদের পক্ষে। অতুলের ঘর থেকে যে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে তাতে বারবার 'ন্যায় বাকি' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু এই নোট লেখাই নয়, অতুল একটি ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টও করেছিলেন। যেখানে তিনি ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস হারাচ্ছেন বিচারব্যবস্থার প্রতি।
অতুলের ভাইয়ের বক্তব্য, ভারত সরকার এবং রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করব বিষয়টি খতিয়ে দেখতে। অতুল যদি ঠিক হয় তাহলে যেন সে বিচার পায়। যতদিন বেঁচে ছিল প্রচণ্ড মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে গেছে সে। বিচারের আশা করেছিল কিন্তু পায়নি। তাই মৃত্যুর পর যেন তাঁকে অন্তত বিচার দেওয়া হয়। অতুলের এক বন্ধু জ্যাকশন জানিয়েছেন, গোটা সিস্টেমের সঙ্গে লড়াই করছিল অতুল। মানসিক চাপের মধ্যে থেকে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা হয়তো ভেবেচিন্তেই নিয়েছে। কারণ তাঁর শেষ ভিডিও দেখে মনে হয়নি অতুল মানসিকভাবে অসুস্থ।
ইঞ্জিনিয়ারের পরিবার স্পষ্ট দাবি করেছেন, তাঁদের ছেলেকে মাসের পর মাস মানসিক অত্যাচার করা হয়েছে। ভুয়ো মামলা, ছেলেকে নিয়ে চলে যাওয়া, তাঁর সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে না দেওয়া, লক্ষ-কোটি টাকা চাওয়া... সব মিলিয়ে নিকিতা এবং তাঁর পরিবার অতুলকে খুন করেছে বলেই দাবি।