Date : 14th Jun, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
মহেশতলায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকান ও পরিবারগুলিকে সব ধরনের সাহায্যের নির্দেশ সাংসদ অভিষেকেরWTC ফাইনাল: ভারতের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আয়োজনের আশা কি ভেস্তে যাবে?নতুন রূপে পর্দায় আসছে 'শক্তিমান', তবে রণবীর নন, দেখা যাবে এই দক্ষিণী সুপারস্টারকে!বিমান দুর্ঘটনার কথা আগেই জানান জ্যোতিষী? টুইট ঘিরে শুরু বিতর্ক, 'মানবিক' হতে বলল নেটপাড়াAhmedabad Plane Crash: জীবনযুদ্ধের মাঝপথেই ছাড়তে হল ময়দান, অসমাপ্ত ক্রু সদস্যদের কাহিনিওযুদ্ধেও বাইবেল-কোরান, ইজরায়েলের ‘জাগ্রত সিংহের’ বদলায় ইরানের ‘সাচ্চা ওয়াদা’ কেন?অনুব্রত-কাজলকে নিয়ে আলাদা বৈঠকে বক্সী-ফিরহাদ, কেষ্টকে মাথা ঠান্ডা রাখার পরামর্শWTC Final: লর্ডসে সেঞ্চুরি করে ব্র্যাডম্যান-গ্রিনিজদের ক্লাবে মার্করাম, তালিকায় একমাত্র ভারতীয় আগারকরশুভাংশুর মহাকাশ অভিযান, নতুন তারিখ জানাল ইসরোAir India Plane Crash: গঠন করা হল উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি, তিন মাসে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ
Maoist Leader Death

বাসবরাজুর মৃত্যু মাওবাদীদের জন্য বড় ধাক্কা, পার্টি অটুট রাখাই নতুন নেতার প্রধান চ্যালেঞ্জ

একাধিক অভিযানে অল্পের জন্য বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সক্ষম হলেও মঙ্গলবারের লড়াইয়ে তাঁকে হত্যা করতে সক্ষম হয় আধা সেনার জওয়ানেরা।

বাসবরাজুর মৃত্যু মাওবাদীদের জন্য বড় ধাক্কা, পার্টি অটুট রাখাই নতুন নেতার প্রধান চ্যালেঞ্জ

শেষ আপডেট: 22 May 2025 10:45

দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুরো নাম নাম্বালা কেশব রাও (Nambala Keshava Rao)। ডাকনাম বাসবরাজু (Basavraju)। বুধবার ছত্তীসগড়ের (Chhattisgarh) নারায়ণপুরের জঙ্গলে আধা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে যে ২৭ জন মাওবাদী (27 Maoist killed) নিহত হয়েছে বাসবরাজু তাঁদের অন্যতম। নিরাপত্তা বাহিনী তাঁর মাথার দাম ধরেছিল দেড় কোটি টাকা। দেশে আর কোনও ব্যক্তিকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় ধরার জন্য এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঘোষণা করা হয়নি।

বছর সত্তর বয়সি বাসবরাজুকে হত্যার ঘটনাকে আধা সেনার (central force) বড় সাফল্য হিসাবে দেখছে মাওবাদী দমন অভিযানে যুক্ত নিরাপত্তা বাহিনী এবং ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও ছত্তীসগড় প্রশাসন। রাজু একদিকে সিপিআই (মাওবাদী)-র সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে, তিনি একই সঙ্গে ছিলেন তাত্ত্বিক নেতা এবং জনযুদ্ধের চৌকস নেতা।

মাওবাদীদের বিষয়ে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাসবরাজুর মৃত্যু সিপিআই (CPI-Maoist) দলের জন্য বড় ধাক্কা। দেশব্যাপী মাওবাদীদের উপর সরকারি বাহিনীর অভিযানের মুখে তিনি দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখেন তাই-ই শুধু নয়, নিরাপত্তা বাহিনীর রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন। তাঁর প্রশিক্ষণে গেরিয়া যুদ্ধে বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করে ছত্তীসগড় ও তেলেঙ্গানার (Telangana) মাওবাদীরা। দলের নেতৃত্বে আসার আগে রাজু তামিল জঙ্গি সংঘটন এলটিটিই-র কাছে গেরিলা প্রশিক্ষণ নেন। বস্তুত সেই বিশেষ গুণের জন্য দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, পলিট্যব্যুরো এবং শেষে সাধরণ সম্পাদকের পদে বসেন।

তেলেঙ্গানার এক ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান বাসবরাজু কলেজ জীবন শেষ করে মাওবাদী রাজনীতিকে যোগ দেন। গেরিলা যুদ্ধে পারদর্শী বাসবরাজুর নেতৃত্বে ২০১০-এ মাওবাদীরা দান্তেওয়ারায় এক অভিযানে ৭৬জন সিআরপিএফ জওয়ানকে হত্যা করে। ২০১৩-তে ছত্তীসগড়েরই জিরামঘাঁটিতে এক কংগ্রেস নেতা-সহ ২৭জনকে হত্যা করে মাওবাদীরা। সেই অভিযানের পরিকল্পনা এবং নেতৃত্ব দেন বাসবরাজু। তার আগে ২০১৩ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের আলিপিরিতে বোমা বিস্ফোরণে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডুকে। ২০১৮-তে দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর বাসবরাজের গতিবিধি নিয়ে নিরাপত্তা বাহিনী বড় ধরনের সমস্যায় পড়ে। 

একাধিক অভিযানে অল্পের জন্য বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে সক্ষম হলেও মঙ্গলবারের লড়াইয়ে তাঁকে হত্যা করতে সক্ষম হয় আধা সেনার জওয়ানেরা। সিপিআই, সিপিআইএমএল (লিবারেশন)-সহ একাধিক কমিউনিস্ট পার্টি এবং মানবাধিকার সংগঠন বাসবরাজুকে হত্যার নিন্দা করেছে। তাদের বক্তব্য, ওই মাওবাদী নেতাকে হত্যা না করে গ্রেফতার করার সুযোগ ছিল।

বাসবরাজের জায়গায় সিপিআই (মাওবাদী)-র পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হতে পারেন? নানা সুত্রে জানা যাচ্ছে, দুটি নাম আলোচনায় আছে, মাল্লোজুলা বেণুগোপাল ওরফে সোনু এবং থিপ্পিরি তিরুপতি ওরফে দেবজি। ৬৯ বছর বয়সি মাল্লোজুলা তেলেঙ্গানার ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। অন্যদিকে, বছর ষাটের দেবজি তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। অন্যন্য দলের মতো মাওবাদী শিবিরেও নেতৃত্বে জাতপাতের ভারসাম্য রক্ষার বিষয়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়েছে। সিপিআই (মাওবাদী)-র সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের সদস্য দেবজির উত্থান নিয়ে দলে বিরোধ আছে। তেলেঙ্গানার মাদিগা সম্প্রদায়ের এই নেতাকে দলের সাধারণ সম্পাদক করে মাওবাদীদের নেতৃত্বে উচ্চবর্ণের আধিপত্য কমানোর চেষ্টা করা হতে পারে, মনে করছে নিরাপত্তা এজেন্সির কর্তারা।

সিপিআই (মাওবাদী)-র প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক গণপতি দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন। কড়া নজরদারির মধ্যে আছেন তিন শীর্ষ নেতা কে রামচন্দ্র রেড্ডি, মিসির বেসরা এবং পতুলা কল্পনা। ফলে নেতৃত্ব নিয়ে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে দল। সেই সঙ্গে আদর্শিক লড়াইও জোরদার হচ্ছে। দলের একাংশ হত্যা, নাশকতার রাজনীতি থেকে পার্টিকে বের করে আনতে আগ্রহী। নতুন সাধারণ সম্পাদক যিনিই হোন, এমন এক সময় দায়িত্ব নিতে হবে যখন দলের ক্যাডারদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব এবং দল আদর্শগত সংঘাতে জর্জরিত।


ভিডিও স্টোরি