শেষ আপডেট: 16th June 2024 19:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাঠ্য বই থেকে মুছে দেওয়া হল বাবরি মসজিদের নাম। বদলে এসেছে অযোধ্যার নতুন ইতিহাস। ‘ন্যাশনাল কারিকুলাম ফর এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ অর্থাৎ এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ের নতুন সংস্করণ ঘিরে ফের বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে।
এনসিইআরটি হল কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা মন্ত্রকের অধীনে একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থা। মূলত সিবিএসই বোর্ড এনসিইআরটির পাঠ্যক্রম মেনে চলে। এছাড়া আইসিএসই এবং আইএসই বোর্ডও কোনও কোনও ক্ষেত্রে এই পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে। গত সপ্তাহেই প্রকাশিত হয়েছে এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন সিলেবাস। যেখানে অযোধ্যা অধ্যায়ে সংশোধনী আনা হয়েছে। চার পৃষ্ঠার সংশ্লিষ্ট অধ্যায়টি কমিয়ে দুই পৃষ্ঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। বাবরি মসজিদ ভাঙার অংশটা পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইতে আগে বাবরি মসজিদ প্রসঙ্গে লেখা ছিল, ষোলোশো শতাব্দীতে মুঘল সম্রাট বাবরের সেনাপতি মির বাকি এই মসজিদ নির্মাণ করেন। তবে এনসিইআরটি-এর তরফে যে নতুন সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে বাবরি মসজিদের নাম মুছে দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি তিনটি গম্বুজওয়ালা একটি স্থাপত্য। যা ১৫২৮ সালে রামের জন্মস্থলে তৈরি করা হয়েছিল। যদিও এই কাঠামোর ভিতরে ও বাইরে হিন্দুদের নানা চিহ্ন ও প্রতীক স্পষ্ট ভাবে দেখতে পাওয়া যায়।
অযোধ্যা বিতর্কে পুরনো সিলেবাসে উল্লেখ করা হয়েছিল, ১৯৮৬ সালে মসজিদের তালা খোলার পর আদালতের নির্দেশে দুপক্ষকেই তাঁদের ধর্মীয় আচার পালনের অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিজেপির সোমনাথ থেকে অযোধ্যা রথযাত্রা, বাবরি ধ্বংসে করসেবকদের ভূমিকা সহ বাবরি মসজিদকে ঘিরে নানা ঘটনা-উত্তজেনার কথা সবই ছিল পুরানো সিলেবাসে। যা নতুন সিলেবাসে একেবারেই বাদ দেওয়া হয়েছে। এমনকী এই মসজিদ ধ্বংসের জন্য উত্তরপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংয়ের সরকারকে ভর্ৎসনার বিষয়টি পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে।
নতুন বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরি হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মসজিদ তৈরির জন্য দেওয়া হয়েছে আলাদা জমি। আর এই সিদ্ধান্ত সমাজের অধিকাংশ মানুষ সাদরে মেনে নিয়েছেন। একইসঙ্গে গুজরাতের দাঙ্গা প্রসঙ্গটিও পাঠ্যবই থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে শিক্ষাবিদদের একাংশের মতে, সংশোধনের মাধ্যমে পাঠ্যক্রমের গৈরিকিকরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও সেই অভিযোগ মানতে নারাজ এনসিইআরটি-র ডিরেক্টর দীনেশ প্রসাদ সাকলানি। তাঁর দাবি, পড়ুয়াদের দাঙ্গা বা হিংসা বিষয়ে শিক্ষা দিলে ‘হিংসাত্মক এবং হতাশাগ্রস্ত সমাজ তৈরি হতে পারে’। সেই কারণেই, গুজরাট দাঙ্গা এবং বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মতো বিষয়গুলি স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।