শেষ আপডেট: 15th July 2024 16:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রামমন্দির-বাবরি মসজিদ, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির-জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্কের পর এবার মধ্যপ্রদেশের ভোজশালার কাঠামোকে হিন্দু মন্দির বলে পাস সার্টিফিকেট দিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। আদালতে জমা দেওয়া বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা রিপোর্টে বিতর্কিত ভোজশালার মন্দির-কামাল মৌলা মসজিদ চত্বরকে মন্দির বলেই ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এএসআই জানিয়েছে, ওখান থেকে বেশকিছু ঐতিহাসিক শিল্পনমুনা কীর্তি ও বিগ্রহ উদ্ধার হয়েছে।
সোমবার ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের ইন্দোর বেঞ্চে ২ হাজার পাতায় সমীক্ষা রিপোর্টটি জমা দেয়। হিন্দুদের তরফে আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন সমীক্ষা রিপোর্ট সম্পর্কে বলেন, ৯৪টির বেশি ভাঙাচোরা মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। তাঁর দাবি, এতে করেই প্রমাণ হয়, জায়গাটি অতীতে হিন্দু মন্দির ছিল। ওখানে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি দেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, আজ অত্যন্ত আনন্দের দিন। এএসআই আজ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, জায়গাটি হিন্দু মন্দির হিসেবে ব্যবহৃত হতো। ২০০৩ সালে এএসআই যে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছিল তাকে বেআইনি বলে জৈন বলেন, ৯৪টির বেশি ভাঙা মূর্তি উদ্ধার হয়েছে। যাঁরা সেগুলি দেখেছেন, তাঁরাই বলবেন ওটা হিন্দু মন্দির ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুলাই হাইকোর্ট এএসআইকে বিতর্কিত কাঠামোর বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা রিপোর্ট ১৫ জুলাইয়ের ভিতর জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই মতো এদিন এএসআইয়ের কৌঁসুলি হিমাংশু জোশি সম্পূর্ণ রিপোর্ট আদালতের রেজিস্ট্রিতে জমা দেন। গত ১১ মার্চ আদালত সংস্থাকে সমীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিল।
রিপোর্টে রয়েছে, সমীক্ষার সময় মূর্তি ছাড়াও ৩১টি মুদ্রা মিলেছে। সেগুলি রুপো, তামা, অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতের তৈরি। মুদ্রাগুলি দশম-একাদশ শতকের ভারত-সাসানীয়, ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দীর দিল্লির সুলতানি আমল, তারপরের শতকের মালওয়া, মুঘল, ধর প্রদেশ এবং ব্রিটিশ আমলের। যে বিগ্রহের অংশগুলি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলি হল গণেশ, ব্রহ্মা, নরসিংহ, ভৈরব এবং অন্যান্য দেবদেবী, মানুষ ও পশুর। পশুর আকৃতির যেগুলি মিলেছে সেগুলি হল সিংহ, ঘোড়া, হাতি, কুকুর, বাঁদর, সাপ, কাছিম, হাঁস এবং পাখি। এছাড়াও কীর্তিমুখসহ আরও কিছু মূর্তির ভগ্নাংশ মিলেছে।
সংস্কৃত ও প্রাকৃতে লেখা কিছু লিপি উদ্ধার হয়েছে। একটি লিপি রাজা নরবর্মনের আমলের এবং একটি মাহমুদ শাহের আমলের। রাজা ভোজের আমলে স্থাপিত এই বাগদেবীর বা সরস্বতী মন্দির কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থাপনা হয়েছিল এই নির্মাণের। অন্যদিকে, মুসলিমদের দাবি, এটি কামাল মৌলা মসজিদ। গত ২১ বছর ধরে এখানে মঙ্গলবার হিন্দুরা পুজোপাঠ এবং শুক্রবার মুসলিমরা নামাজ করে আসছে।