শেষ আপডেট: 1st August 2024 16:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেরলের ওয়ানাড়ে প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে উদ্ধারকাজ চালাতে সেনাবাহিনী হিমশিম খাচ্ছে। কেন্দ্রের কাছে তারা ন্যাশনাল টেকনিক্যাল রিসার্চ অর্গানাইজেশনের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি চেয়ে পাঠাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে এনটিআরও-র রেকো রেসকিউ সিস্টেম এবং রিমোট সেন্সিং ইকুইপমেন্ট।
ওয়ানাড় সহ সমগ্র কেরলে এখনও অঝোরে বৃষ্টি পড়েই চলেছে। আবহাওয়া দফতরের তরফে কোঝিকোড়, ওয়ানাড়, কান্নুর ও কাসারগোড়ে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির জন্য মুন্ডাক্কাইয়ে আপাতত উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
রেকো হল উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত একটি বিশেষ অত্যাধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্র। যা সাধারণত ভূগর্ভের নীচে আটকে থাকা প্রাণ অথবা দেহের সন্ধান দিতে পারে। এনটিআরও-র কাছে এ ধরনের যন্ত্র আছে। যা চেয়ে পাঠাচ্ছে সেনাবাহিনী। কেননা কয়েকশো বর্গকিমি এলাকায় কাদামাটির নীচে এখনও বহু মানুষ রয়ে গিয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে রেকো রেসকিউ সিস্টেম দিয়ে খোঁজ চালাতে চাইছে সেনাবাহিনী। সাধারণত এই প্রযুক্তি খনি ধস বা তুষারধসে চাপা পড়াদের খোঁজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর সেন্সর মাটির নীচে চাপা পড়া মানুষের খোঁজ দিতে সক্ষম। হারমোনিক রাডার সিস্টেমের মাধ্যমে এটা কাজ করে। রেকো ডিটেক্টর ব্যবহার হয় প্রধানত পেশাদারি উদ্ধারকার্য এবং স্কি টহলের কাজে। বিশ্বের প্রায় ৩২ দেশের ৯০০ স্কি রিসর্টে এই ডিটেক্টর রয়েছে।
অন্যদিকে, রিমোট সেন্সিং ইক্যুইপমেন্টও প্রায় একই জাতীয় প্রযুক্তি। যা দেখতে না পাওয়া বা ছুঁতে না পারা কোনও বস্তুর খোঁজ দেয়। এখন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওয়ানাড়ে জীবিত প্রাণের খোঁজ চালাতে চাইছে সেনাবাহিনী। একদিকে সেনাবাহিনী অন্যদিকে রাজ্য সরকার নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উদ্ধারকাজে। তদারকিতে ওয়ানাড়ে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছেন রাজস্বমন্ত্রী, বনমন্ত্রী, পিডব্লুডি এবং পর্যটনমন্ত্রী ও এসসি-এসটি দফতরের মন্ত্রী।
অতিবৃষ্টির জেরে ভূমিধস কবলিত ওয়ানাড় পরিদর্শন করলেন লোকসভা ভোটে এই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত প্রাক্তন সাংসদ রাহুল গান্ধী। বৃহস্পতিবার বিমানে কান্নুর বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে ওয়ানাড় রওনা দেন কংগ্রেসের বিরোধী দলনেতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বোন ও ওয়ানাড় কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সম্ভাব্য প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী।
তাঁরা এদিন চুরালমালা এলাকায় যান। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে গায়ে নীল রঙের রেনকোট পরে গিয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা। মেপ্পাড়ির কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে গিয়ে দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর তাঁরা স্থানীয় একটি হাসপাতাল এবং দুটি ত্রাণশিবিরও দেখতে যান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক তথা আলাপ্পুঝার সাংসদ কেসি বেণুগোপাল।
সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত ওয়ানাড় জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা। জলের তোড়ে ও ধসে জখমের সংখ্যা ২০০। আরও আড়াইশো মানুষ এখনও নিখোঁজ। মুন্ডাক্কাই এবং চুরামালায় নিখোঁজদের কেউ বেঁচে নেই বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। যদিও নিখোঁজদের উদ্ধার ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে সেনাবাহিনী।