শেষ আপডেট: 31st October 2024 00:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। বুধবারই সাইবার প্রতারণা রুখতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন হয়েছে বলে জানিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু তারপরও কিছুতেই আটকানো যাচ্ছে না অপরাধ। এবার একটি কেলেঙ্কারির ছবি সামনে এসেছে। যেখানে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। দেখা যাচ্ছে অপরাধী পুলিশের খাকি উর্দি পরে রয়েছে। কিন্তু নীচে পুলিশের প্যান্টের বদলে রয়েছে সাধারণ পাজামা।
ছবিটি ভাইরাল হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি দ্য ওয়াল। সম্প্রতি ‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ সংক্রান্ত একাধিক ছবি সামনে আসে। সেখান থেকেই ছবিটি পাওয়া গিয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, প্রতারক নিজেকে দিল্লির পুলিশ বলে পরিচয় দিয়ে কাম্বোডিয়ার এক যুবককে ফোন করেছিল। ফোনে অপরাধী জানায় ওই যুবকের নামে একটি প্যাকেট হাতে এসেছে। যাতে ৪০০ গ্রাম মাদক পাওয়া গিয়েছে। কেস তুলে নেওয়ার জন্য বড় অঙ্কের টাকাও চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাও হয় বিস্তর। এরপরই ওই যুবক পুরো বিষয় বুঝতে পারেন এবং তাঁদের কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট নিয়ে রাখেন। পরে তা পুলিশের হাতে তুলে দেন।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের কমিটিও ছবিটি শেয়ার করে অপরাধের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। সম্প্রতি সাইবার অপরাধের প্রবণতা বাড়তেই একটি স্টিং অপারেশন চালানো হয়। সেখানেই অপরাধীদের সঙ্গে বিদেশের যোগসূত্র বেরিয়ে আসে। পরে একাধিক কল রেকর্ড খতিয়ে দেখে মায়ানমার, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং লাওস যোগের অভিযোগ সামনে এসেছে।
‘ডিজিটাল অ্যারেস্ট’ কী?
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই, নারকোটিক্স শাখা, আরবিআই, ট্রাই, শুল্ক বা আয়কর আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফোন করেন প্রতারকেরা। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর কোনও অভিযোগের কথা বলা হয়। কখনও আবার তাঁর সন্তানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে ধরা হয়। একবার সেই ফাঁদে পা দিলেই ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয় ব্যক্তিকে। ফোন করার সময় যে তদন্ত সংস্থার নাম নিয়ে ফোন করা হয়েছে, সেই সংস্থার ইউনিফর্ম পরে থাকেন প্রতারকেরা। সংস্থার দফতরের আদলে ঘরও সাজানো হয়। তাই ভিডিও কলে সেসব দেখে যথেষ্ট বিশ্বাস করে ফেলেন 'টার্গেট' হওয়া ব্যক্তি।
এর পরে 'মামলা' থেকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে মোটা টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে কঠিন শাস্তি পেতে হবে বলেও ভয় দেখানো হয়। এ ভাবেই সাধারণ মানুষদের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারকেরা। এই ফাঁদে পা দিয়ে ইতিমধ্যে বহু মানুষ প্রতারিত হয়েছেন।
কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে ৭ লাখ ৪০ হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। ২০২৩ সালেও সেই সংখ্যা ছিল সাড়ে ১৫ লাখের বেশি। ২০২২ সালে অভিযোগ জমা পড়ে সাড়ে ৯ লাখ। ২০২১ সালে তা ছিল সাড়ে ৪ লাখের কাছাকাছি। গত তিন বছরের পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলেই বোঝা যায়, সাইবার সংক্রান্ত অপরাধের উদ্বেগ ঠিক কতটা গুরুতর।