শেষ আপডেট: 9th November 2024 12:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটের নেতারা মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি দখলে ব্যস্ত বলে বৃহস্পতিবারই রাজ্যে প্রচারে গিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বলেছিলেন, ‘গাড়ির চালকের আসনে বসার জন্য বিরোধী নেতারা কামড়াকামড়ি শুরু করেছেন।’ দিনের শেষে সেই মহারাষ্ট্রে শাসক জোট মহায়ুতি বা মহাজোটেও একই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী যখন জনসভায় দাবি করছেন, বিজেপি-শিবসেনা (শিন্ডে)-এনসিপি (অজিত) জোটে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে মারামারি, কাটাকাটি নেই, তখন রাজ্যের আর এক সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ভাষণে ছিল ভিন্ন সুর। মহারাষ্ট্রের সাঙ্গোলি জেলায় বৃহস্পতিবার দুটি সভা করেন শাহ। দুটি সভাতেই বলেন, ‘আমি দেড় মাস ধরে এ রাজ্যে প্রচারে আসছি। মানুষের মুড যা বুঝেছি, তারা চাইছেন ক্ষমতাসীন মহায়ুতি আবার ক্ষমতায় ফিরুক এবং দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ পুনর্নিবাচিত হন।’
শাহের এই বক্তব্য ঘিরে বিরোধীদের পাশাপাশি শাসক জোটেও জল্পনা শুরু হয়েছে। ক্ষমতাসীন মহাজোট ক্ষমতা ধরে রাখতে পারলে আর একনাথ শিন্ডে নন, মুখ্যমন্ত্রী হবেন বিজেপির ফড়ণবিশ, এমনই আভাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই বার্তা দিতেই তিনি শুধু ফড়ণবিশকে পুনর্নিবাচিত করার কথা বলেছেন, মনে করছেন জোট নেতারাও।
কালক্ষেপ না করে শাহের বক্তব্যের উল্টো সুরে কথা বলেন এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার। তিনি স্পষ্ট বলেন, ‘জোটের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভোটের আগে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে তুলে ধরা হবে না। অমিত শাহের বক্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। জোট ধর্ম মানলে বিজেপি দলগতভাবে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে ঘোষণা করতে পারবে না।’
অজিত পাওয়ারের কথায় আবার বিরক্ত একনাথ শিন্ডের শিবসেনা। তিনি স্পষ্ট করে দেন, একনাথ শিন্ডেও জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী নন। অর্থাৎ ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি অজিত।
শাহ এবং অজিতের কথায় বিরক্ত একনাথ শিন্ডের দল কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। শিন্ডের দলের নেতা রাহুল শোবালের বক্তব্য, দুয়ারে ভোট। এখন মুখ্যমন্ত্রী মুখ নিয়ে আলোচনা করার সময় নয়। নেতাদের কাজ হল ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে জোট প্রার্থীদের জয়যুক্ত করা।
মহারাষ্টে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে শাসক ও বিরোধী, দুই জোটেই জটিলতা আছে। কংগ্রেস-এনসিপি (শরদ পাওয়ার)-শিবসেনা (উদ্ধব) জোটের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হতে চেয়েছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। দাবি তুলেছিলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নাম প্রস্তাব করলে শিবসেনার সমর্থকেরা জোটকে জেতাতে বাড়তি উৎসাহ পাবে। উদ্ধবেরর দলের নেতা সঞ্জয় রাউত কংগ্রেস ও এনসিপি নেতাদের বলেছিলেন, উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরের পুত্র। জোটে তাঁকে গুরুত্ব দেওয়া হলে ভোটের সুফল জোটের প্রার্থীরাই পাবেন। কিন্তু কংগ্রেস ও এনসিপি (শরদ পাওয়ার) তাতে সায় দেয়নি।
প্রধানমন্ত্রী মোদী বিরোধী জোটের এই বিভাজনকে মহারাষ্ট্রে প্রচারে হাতিয়ার করেন। বলেন, ‘গাড়ি একটা। চালক হওয়ার দাবিদার বহু। এরা কী করে রাজ্য চালাবে?’ পাল্টা প্রচারে বিরোধী নেতারা শাহের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি এবং শিন্ডের শিবসেনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না।