শেষ আপডেট: 9th December 2024 12:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংখ্যাগুরু হিন্দুদের মর্জি অনুযায়ী দেশ চলবে। না এই মন্তব্য কোনও বিজেপি নেতা বা হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বক্তার নয়। এই কথা বলছেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন বিচারপতি। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সভা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর এই মন্তব্য আপাতত বিতর্কের ঝড় তুলেছে।
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব প্রয়াগরাজে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সেখানে ছিলেন দীনেশ পাঠক নামের আরও একজন বিচারপতি। সেই মঞ্চ থেকেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বা ইউনিফর্ম সিভিল কোড নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। তখনই তিনি বলেন, ''এটা হিন্দুস্তান। সংখ্যাগুরুদের মর্জিমতো দেশ চলবে।'' কেন এই মন্তব্য করলেন তিনি, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিচারপতি।
শেখর কুমার যাদব বলছেন, ''এটা বলতে কোনও বাধা নেই যে এটাই দেশের আইন। সংখ্যাগুরুদের জন্যই দেশের আইন চলে। পরিবার বা সমাজের আঙ্গিকে দেখুন, সংখ্যাগুরুদের উন্নতি এবং সুবিধা যেটায় হয়, সেটাই দেশের আইনে গ্রহণযোগ্য।'' নিজের মন্তব্যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে কোনও কথা না বললেও তিনি স্পষ্ট বলেন, একাধিক বিয়ে করা, তালাক প্রথা, হালাল এগুলি এ সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।
এখানেই বক্তব্য শেষ হয়নি হাইকোর্টের বিচারপতির। তিনি আরও বলেন, শাস্ত্র বা বেদে যে নারীকে দেবী হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তাঁকে অপমান করা যায় না, কেউ করলে সহ্য করা হবে না। কারও অধিকার নেই চার-পাঁচটা বিয়ে করার, তিন তালাক দেওয়ার। যদিও তিনি এও বলেন, হিন্দু ধর্মেও সতীদাহ প্রথা এবং বাল্যবিবাহের মতো খারাপ জিনিস ছিল। তবে রাজা রামমোহন রায়ের মতো ব্যক্তিত্ব সেইসবের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন।
তাঁর এও বক্তব্য, ''হিন্দুরা ছোট কোনও পশু না মারারও শিক্ষা পেয়ে থাকে। এগুলি আমাদের থেকে অন্যদের শেখা উচিত। কারণ এভাবেই হয়তো আমরা অন্যদের ব্যথা অনুভব করতে পারি। কিন্তু যে ধর্মে ছোট থেকেই শিশুরা পশু হত্যা দেখে আসে তারা বড় হয়ে সহিষ্ণু হবে এ আশা করা যায় না।''
এই প্রথম এমন বিতর্কিত মন্তব্য করে সংবাদ শিরোনামে আসেননি এই বিচারপতি। এর আগে ২০২১ সালে তিনি সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছিলেন, গরুই একমাত্র প্রাণী যে অক্সিজেন ছাড়ে। পাশাপাশি গরুকে জাতীয় পশু ঘোষণা করার দাবিও তুলেছিলেন তিনি।