এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, 'দুপুর ১.৩০টা নাগাদ হঠাৎ খুব জোরে একটা আওয়াজ পাই। এমন শব্দ আগে কখনও শুনিনি। মনে হচ্ছিল কানে তালা লেগে যাবে। গোটা বাড়িটাই কেঁপে উঠতে শুরু করল। টেবিল-চেয়ার নড়ে ওঠে, মনে হচ্ছিল, ভূমিকম্প হচ্ছে কিংবা কাছেই কোথাও বোমা ফেটেছে।'
ফাইল চিত্র- আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনা
শেষ আপডেট: 14 June 2025 13:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) পর দু'দিন কেটে গেলেও ক্ষত এখনও টাটকা। প্রাণ গিয়েছে আড়াইশো জনেরও বেশি মানুষের। টেক অফের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই ১৭১ নম্বরের (Air India AI 171) বিমানটি। প্রাণরক্ষা হলেও দুর্ঘটনার মুহূর্ত ভুলতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, 'দুপুর ১.৩০টা নাগাদ হঠাৎ খুব জোরে একটা আওয়াজ পাই। এমন শব্দ আগে কখনও শুনিনি। মনে হচ্ছিল কানে তালা লেগে যাবে। গোটা বাড়িটাই কেঁপে উঠতে শুরু করল। টেবিল-চেয়ার নড়ে ওঠে, মনে হচ্ছিল, ভূমিকম্প হচ্ছে কিংবা কাছেই কোথাও বোমা ফেটেছে।' আরও একজন বলেন, 'বিকট একটা শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি আকাশজুড়ে কালো ধোঁয়া, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে, বিমানের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।'
স্থানীয় এক যুবক বলেন, 'আমি তখন বাড়িতেই ছিলাম। কালো ধোঁয়া চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছিল। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ছিল। সত্যি বলতে, মনে হচ্ছিল ভূমিকম্প হয়েছে।' ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরেই বসত বাড়ি বাহাদুর ক্ষত্রিয় নামে এক ব্যক্তির। তিনি বলেন, 'প্রথমে বুঝতেই পারিনি কী হয়েছে। শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি চারদিকে ধোঁয়া ও আগুন। তারপর বন্ধু ও নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে মিলে হোস্টেলের ধ্বংসস্তূপ থেকে ৫ জন ছাত্রকে উদ্ধার করি। তবে তাঁদের অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক।'
গত বৃহস্পতিবার অভিশপ্ত এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বিমানটি (Air India Plane Crash) দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটে আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে ওড়ে। টেক অফের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই তা গুজরাতের মেঘানিনগরের বিজে মেডিক্যাল কলেজ সিভিল হাসপাতালের আবাসিক জুনিয়র ডাক্তারদের হোস্টেলের ওপর ভেঙে পড়ে। এখনও পর্যন্ত ১০ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।
দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানে ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কেবল একজন যাত্রী প্রাণে বেঁচেছেন। তিনি আমদাবাদের সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বাকি ২৪১ জন যাত্রী-সহ দুই পাইলট এবং কেবিন ক্রুদের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে এয়ার ইন্ডিয়া।
বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ (One Crore Aid) দেবে টাটা গোষ্ঠী (Tata)। পাশাপাশি তৈরি করে দেওয়া হবে ক্ষতিগ্রস্ত বিজে মেডিক্যাল কলেজও। ইতিমধ্যেই এই ঘোষণা করা হয়েছে।
এবার জানা গিয়েছে, আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার পর, ‘এআই ১৭১’ ফ্লাইট নম্বরটি স্থায়ীভাবে বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া এবং এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস (AI Express)। সূত্র অনুযায়ী, ১৭ জুন থেকে আমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী গ্যাটউইক বিমানের নম্বর এআই ১৭১-এর বদলে হবে এআই ১৫৯। বুকিং সিস্টেমে এই পরিবর্তন ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে। এও দুর্ঘটনার স্মৃতি মুছে ফেলার এক চেষ্টা।