মাত্র ৯ দিনের জন্য ভারতে এসেছিলেন রমেশচন্দ্র প্যাটেল (Ramesh Chandra Patel)। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—গুজরাতে এসে বাতাবিলেবু (Jambura Fruit) খাওয়া।
প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 14 June 2025 11:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাত্র ৯ দিনের জন্য ভারতে এসেছিলেন রমেশচন্দ্র প্যাটেল (Ramesh Chandra Patel)। উদ্দেশ্য ছিল একটাই—গুজরাতে এসে বাতাবিলেবু (Jambura Fruit) খাওয়া। কিন্তু সেই সফরই যে শেষ সফর তা কে জানত। আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) তাঁর মৃত্যুতে শোকে পাথর গোটা পরিবার। শুক্রবার রমেশের নিথর দেহ নিতে ভারতে আসেন আত্মীয়রা।
লন্ডনপ্রবাসী রমেশ গুজরাতের (Gujarat) হিমতনগরের বাসিন্দা। প্রতিবছরই স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে নিজের বাড়িতে এসে সপ্তাহখানেক সময় কাটাতেন। এবার যদিও একাই এসেছিলেন। রমেশের মেয়ে প্রীতির কথায়, "বাবা, গত মঙ্গলবার, ৪ জুন ভারতে এসেছিল। মাত্র ৯ দিনের জন্য। বলেছিল, বাতাবিলেবু খেতে মন চেয়েছে, তাই এসেছে। সেটা খেয়ে আবার ফিরে যাবে।"
এবারই যে বাবাকে শেষবার কাছে পাবেন, সেটা ভাবতেও পারেননি প্রীতি। সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রমেশকন্যা বলেন, "এই প্রথম বাবার সঙ্গে সপ্তাহে তিন-চারবার কথা বলেছিলাম। মঙ্গলবার ভিডিও কল করেছিল। আমি তখন কাজ করছিলাম, ভাবছিলাম পরে ফোন করব। আর ফোন করা হল না...।"
পরিবার আর দেশের টানেই প্রত্যেকবার ভারতের মাটি ছুঁতে আসতেন রমেশ। প্রীতি বলেন, "উনি দেশটাকে অসম্ভব ভালবাসতেন। আমাদের গুজরাতে একটা বাড়ি আছে। মা-বাবা মিলে সেখানেই থাকত। এবার শুধু বাতাবিলেবু খাওয়ার জন্যই এসেছিল। আর ফেরার সুযোগই পেল না।"
গত বৃহস্পতিবার আমদাবাদ বিমানবন্দর থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট (Air India Plane Crash) এআই-১৭১ ওড়ার কিছুক্ষণ পরই ভেঙে পড়ে শহরের এক ডাক্তারদের হস্টেলের উপর। ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ জনের মধ্যে ২৪১ জনের মৃত্যু হয়। বেঁচে যান মাত্র একজন। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এই দুর্ঘটনার পর নিহতদের পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছে বিমান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া। তবে এই ক্ষতিপূরণ নিয়ে উদাসীন রমেশকন্যা। বলেন, "টাকা দিয়ে কি বাবাকে ফিরে পাওয়া যাবে? যাবে না! একটা জীবন কখনও টাকা দিয়ে পূরণ করা যায় না। আমরা পাঁচজন ভারত এসেছি, যে কোনও রকম ঝুঁকি এড়াতেই আর এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে আসিনি। আমাদের ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা বাড়িতে একা রয়েছে। আর কোনও প্রিয়জনকে হারানোর সাহস ছিল না।"