হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি এখনও ভাবতে পারছেন না কোথা থেকে কী হয়ে গেল। ২৪২ জনের মধ্যে কীভাবে শুধু তিনি বেরিয়ে এলেন জ্বলন্ত বিমানের ভিতর থেকে।
হাসপাতালে রমেশের সঙ্গে কথা বলছেন অমিত শাহ
শেষ আপডেট: 13 June 2025 04:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে ফিরেছেন এক ব্রিটিশ ভারতীয় নাগরিক। বৃহস্পতিবার দুপুরে আমদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দেওয়া এয়ার ইন্ডিয়ার AI 171 বিমানের যাত্রী ছিলেন বিশ্বাস কুমার রমেশ। তিনি বসেছিলেন ১১এ নম্বর সিটে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় ছিটকে পড়লেও প্রাণে বেঁচে যান। ঠিক কী হয়েছিল দুর্ঘটনার সময়? বিছানায় শুয়ে সেকথাই বলে চলেছেন তিনি।
গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে আমদাবাদের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রমেশ। গতকালই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শুক্রবার সকালে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সকলের সঙ্গেই কথা বলেছেন তিনি। অভিজ্ঞতার কথা বলছে গিয়ে জানাচ্ছেন, টেক অফের ৩০ সেকেন্ড পরই একটা বিকট শব্দ হয়। তারপর সব শেষ। কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি।
হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি এখনও ভাবতে পারছেন না কোথা থেকে কী হয়ে গেল। ২৪২ জনের মধ্যে কীভাবে শুধু তিনি বেরিয়ে এলেন জ্বলন্ত বিমানের ভিতর থেকে। তাঁর বুকে আঘাত রয়েছে, তবে, বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছেন বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। অভিজ্ঞতার কথা বলার পাশাপাশি তিনি খুঁজে চলেছেন ভাই অজয় কুমার রাকেশ (৪৫)-কে।
লেস্টারে বসবাসকারী তাঁদের আত্মীয় নয়ন কুমার (২৭) জানিয়েছেন, ভাই ফোন করে বলেছিল,‘কীভাবে যে বেরোলাম, জানি না!’ ওর গলায় আতঙ্ক আর অবিশ্বাস স্পষ্ট।
লন্ডনগামী ওই বিমানে ২৪২ জন যাত্রী ছিলেন। ট্যাঙ্কে ১ লক্ষ লিটার জ্বালানি ভরে যাত্রা শুরু করেছিল বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। উড়ানের মাত্র ৩২ সেকেন্ডের মাথায় ভেঙে পড়ে বিমানটি। একটি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাসের উপর আছড়ে পড়ে। ইতিমধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে ওই হস্টেল থেকে। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছেন, জ্বালানির পরিমাণ এবং আগুনের তীব্রতার কারণে উদ্ধারকার্যে যথেষ্ট অসুবিধা হয়েছে। পাইলট সুমিত সবরওয়াল এবং ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দার ছিলেন বিমানের দায়িত্বে। পাইলটের ৮,২০০ ঘণ্টার ফ্লাইং অভিজ্ঞতা থাকলেও কিছু করা যায়নি। পাইলট হাতে সময়ই পাননি। শেষ মুহূর্তে ‘মে ডে’সংকেত পাঠান এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলে। সেখান থেকে কোনও সাড়া মেলেনি বলে খবর।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বিমানটি প্রথমে স্বাভাবিক গতিতেই রানওয়ে থেকে উড়ে যায়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ফের নীচের দিকে নামতে শুরু করে। এবং নীচে পড়ে বিস্ফোরন হয়।
এই ঘটনায় মৃতদের পরিবার এবং আহতদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছে ভারত সরকার এবং আন্তর্জাতিক মহল। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছে টাটা গ্রুপ।