সংগৃহীত ছবি
শেষ আপডেট: 8 May 2025 13:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে অপারেশন সিঁদুরের পর দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। জরুরি পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে। পাশাপাশি ভুঁয়ো খবর ও দেশবিরোধী প্রচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তানের নয় জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর দেশের সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে বুধবারই বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের লেফটেন্যান্ট গভর্নররা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাত ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীরা এবং সিকিম সরকারের প্রতিনিধি। এই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'দেশের জনগণের মধ্যে জাতীয় ঐক্যের যে সঞ্চার হয়েছে, তা দেশের মনোবল বাড়িয়েছে। জরুরি পরিষেবা যেমন স্বাস্থ্য, অগ্নিনির্বাপক বিভাগ ও প্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। এছাড়াও ডিজাস্টার রেসপন্স টিম, সিভিল ডিফেন্স, হোম গার্ড ও এনসিসি সদস্যদের সতর্ক থাকতে হবে।'
এছাড়া, অপপ্রচারের বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন অমিত শাহ। দেশের এই পরিস্থিতিতে কোনরকম ভুঁয়ো খবর প্রচার করা বা শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ভুঁয়ো খবর এবং বিভ্রান্তিকর তথ্য রুখতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে যৌথভাবে দ্রুত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুরে’র ফলে গুরুত্বপূর্ণ জঙ্গি ঘাঁটি শেষ হয়ে যাওয়ার পর পাকিস্তান কার্যত দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ভারতের ঐক্যকে ছত্রভঙ্গ করতে ও ঘুরিয়ে দেশের মনোবল নষ্ট করতে ডিজিটাল দুনিয়ায় মিথ্যাচার শুরু করেছে। পাকিস্তান-সমর্থিত একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পুরনো ছবি, ভিডিওকে নতুন বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
এমনই একটি ভাইরাল ছবিকে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়। সেখানে দাবি করা হয়, পাকিস্তান সেনা বাহাওয়ালপুরে একটি ভারতীয় রাফালে জেট গুলি করে নামিয়েছে। কিন্তু পিআইবি ফ্যাক্ট চেক করে জানায়, ছবিটি আসলে ২০২১ সালে পাঞ্জাবের মোগায় একটি মিগ-২১ ভেঙে পড়ার সময়ের ছবি। আরেকটি ভুয়ো ভিডিওতে দাবি করা হয়, চোরা পোস্টে ভারতীয় সেনা সাদা পতাকা তুলে আত্মসমর্পণ করেছে। পাকিস্তানের মন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার এই ভুঁয়ো দাবি সমর্থনও করেন। কিন্তু এর কোনও প্রমাণ নেই।
পাকিস্তান বিমান বাহিনী শ্রীনগরের বায়ুসেনা ঘাঁটি আক্রমণ করেছে বলেও একটি ভিডিও ছড়ানো হয়, যা আসলে ছিল ২০২৪ সালের শুরুতে খাইবার পাখতুনখোয়ায় সাম্প্রদায়িক হিংসার ভিডিও। একইভাবে, বারমারে ২০২৪ সালের একটি মিগ-২৯ দুর্ঘটনার ছবিও শেয়ার করে ভারতের ক্ষয়ক্ষতির ভুঁয়ো প্রচার চালানো হয়।
এখানেই শেষ নয়, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ দাবি করে বসেন, ভারতের বেশ কয়েকজন সেনাকে বন্দি করা হয়েছে। পরে অবশ্য তিনি নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার করেন, কারণ এর কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এই সমস্ত ঘটনা প্রমাণ করে, পাকিস্তান পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে, যাতে বাস্তব চিত্রটা আড়াল করা যায় এবং ভারতের সাফল্যকে প্রশ্নের মুখে ফেলা যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাই রাজ্যগুলোকে অনুরোধ করেছেন, তারা যেন জনগণের মধ্যে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেয় এবং এই মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।