পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে পূজা স্বীকার করেছেন, এই খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি নিজেই।
পূজা ও তাঁর শাশুড়ি সুশীলা
শেষ আপডেট: 2 July 2025 13:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: স্বামী মারা যেতে দেওরের সঙ্গে লিভ-ইন। দেওর মারা যেতে আরেক দেওরের সঙ্গে সম্পর্ক। সম্পত্তি লোভে শাশুড়িকে খুন। গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত উত্তরপ্রদেশের মহিলা। খুনের ঘটনায় তাঁর বোন ও বোনের প্রেমিকেরও নাম জড়িয়েছে। ঘটনা উত্তরপ্রদেশেক ঝাঁসির।
পূজা সিং, স্বামী মারা যাওয়ার পর দেওর কল্যাণ সিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন ও বাড়ি ছেড়ে তাঁর সঙ্গে লিভ-ইন করতে শুরু করেন। কল্যাণের হঠাৎ মৃত্যু হয়। তখন পূজাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে আনেন তাঁর শ্বশুর অজয় সিং ও আরেক দেওর সন্তোষ সিং। সন্তোষ বিবাহিত ছিলেন। বাড়িতে শ্বশুর-শাশুড়ি, সন্তোষ, তাঁর স্ত্রী ও পূজা থাকতে শুরু করেন।
সবকিছু ঠিকই চলছিল। কিন্তু পূজা এরপর সন্তোষের প্রেমে পড়েন ও সম্পর্কে জড়ান। তাঁদের একটি কন্যা সন্তানও হয়। যার বিরোধিতা করে সন্তোষের স্ত্রী বাড়ি ছেড়ে চলে যান। এবার বাড়িতে নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন তিনি। পরিবারে জমি বিক্রির সিদ্ধান্তে বেশি প্রভাব খাটাতে শুরু করেন। মোট ১৬ বিঘা জমি ছিল পূজার শ্বশুর বাড়ির অধীনে। যার মধ্যে ৮ বিঘা নিজের দাবি করে সেই জমি বিক্রি করে গোয়ালিয়র যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন মহিলা। শ্বশুর অজয় ও সন্তোষ রাজি থাকলেও বাধা হয়ে দাঁড়ান সুশীলা দেবী। সেই বাধা দূর করতে বোন ও তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে মিলে সুশীলাবেদীকে খুনের চক্রান্ত করেন।
২৪ জুন সকালে, ঝাঁসির কুমহারিয়া গ্রামে সুশীলা দেবীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তদন্তে নামে পুলিশ। পরিবারের সদস্যদের জেরা, ফরেন্সিক রিপোর্ট এবং স্থানীয়দের বক্তব্যের ভিত্তিতে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয় মৃতার কনিষ্ঠ পুত্রবধূ অর্থাৎ পূজা এবং পূজার বোন কমলাকে। পাঠানো হয় জেল হেফাজতে।
পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে পূজা স্বীকার করেছেন, এই খুনের ষড়যন্ত্র করেছিলেন তিনি নিজেই। পরিকল্পনায় ছিলেন কমলা এবং কমলার প্রেমিক অনিল বর্মা। সুশীলা দেবীর সোনার গয়নাগাটি (মূল্য আনুমানিক ৮ লক্ষ টাকা) ও জমির অংশ বিক্রি করে পালানোর পরিকল্পনা ছিল।
দেহ উদ্ধারের সময় সুশীলার ঘর লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পাওয়া যায়। গয়না, একটি মোটরবাইক ও একটি দেশি পিস্তল নিখোঁজ ছিল। তদন্তে জানা যায়, সেই চুরি যাওয়া গয়নাগুলি বিক্রি করার চেষ্টা করছিলেন অনিল বর্মা। পুলিশের নজরে পড়তেই মঙ্গলবার রাতে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা হয়। ধরা পড়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালান অনিল। পালটা গুলিতে মাটিতে পড়ে যান তিনি ও তারপর গ্রেফতার করে ভর্তি করা হয় ঝাঁসি মেডিক্যাল কলেজে।
পাড়ার লোকজন বলছেন, শান্ত স্বভাবের পূজা যে এভাবে পরপর তিনটে সম্পর্ক ও খুনের ষড়যন্ত্রে করবেন, তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেননি। পুলিশের তদন্তে উঠে আসছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। তাঁরা পূজার স্বামী ও দেওরের মৃত্যু নিয়েও সন্দেহপ্রকাশ করেছেন। সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানা যাচ্ছে।