ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 10 May 2025 23:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত-পাকিস্তান (India- Pakistan) সীমান্তে উত্তপ্ত পরিস্থিতি ও পুরোদস্তুর যুদ্ধপরিস্থিতির আশঙ্কায় আমেরিকা যে হস্তক্ষেপ করেছিল তা এখন অনেকটাই স্পষ্ট। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও তাঁর সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এ ব্যাপারে পরিষ্কার ভাবে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, আমেরিকাই মধ্যস্ততা করে দু’দেশকে যুদ্ধবিরতির (Ceasefire) জন্য রাজি করিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সিএনএন (CNN) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সূত্র থেকে পাওয়া এক ‘উদ্বেগজনক ও গোপন তথ্য’-র ভিত্তিতে মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা শুক্রবার আলোচনায় বসেন। তারপরই মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স শুক্রবার দুপুরে সরাসরি ফোন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে ভারত-পাক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, বিদেশ সচিব ও অস্থায়ী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মার্কো রুবিও এবং হোয়াইট হাউসের চিফ অফ স্টাফ সুজি ওয়াইলস। তখনই জানা যায়, একটি গুরুতর গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে আমেরিকা। সেই গোয়েন্দা তথ্য মোতাবেক, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি ভয়ানক তীব্র হয়ে ওঠার ইঙ্গিত ছিল।
সিএনএনের বক্তব্য, সেই তথ্যের প্রকৃতি কেমন ছিল তারা তা জানতে পারেনি। মার্কিন প্রশাসন গোপনীয়তার স্বার্থে তা জানায়নি। তবে মার্কিন প্রশাসনিক কর্তারা সিএনএন-কে জানিয়েছেন, সেটিই ছিল হস্তক্ষেপের ‘টার্নিং পয়েন্ট’।
ভ্যান্স ওই দিন আমেরিকার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টায় মোদীর সঙ্গে কথা বলেন। ফোনালাপে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে এবং সপ্তাহান্তে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাই অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। একই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন এমন একটি ‘অফ-র্যাম্প’ বা সমঝোতার রাস্তাও তুলে ধরেছিল, যা পাকিস্তানের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য হতে পারে বলেও জানান তিনি।
ফোনে এই কথোপকথনের পরপরই বিদেশ সচিব মার্কো রুবিও ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে রাতভর কথা বলেন। তাও তিনি করেন ফোনের মাধ্যমেই এবং এই যাত্রায় রুবিও ফোন করেন পাক সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরকে। তবে মার্কিন প্রশাসন CNN-কে জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতির চুক্তির খসড়া প্রস্তুত করেনি, শুধু আলোচনা শুরু করিয়ে দেওয়াটাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।
তাদের মতে, মোদী-ভ্যান্স ফোনালাপই ছিল পরিস্থিতি বদলের প্রধান মুহূর্ত। কারণ সেই সময় পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি কোনও যোগাযোগ হচ্ছিল না এবং পরিস্থিতি দ্রুত হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল। এই ঘটনার পর শনিবার সন্ধ্যা ৫টা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। দুই দেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্তারা একে অপরের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন এবং সমস্ত সামরিক হামলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে পৌঁছন।
কূটনীতিকদের অনেকের মতে, আমেরিকার এই চাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতা না থাকলে এই যুদ্ধবিরতি এত দ্রুত সম্ভব হত না।