শেষ আপডেট: 16th September 2024 15:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ৯০ আসনের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনের জন্য ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ৫ অক্টোবর। ৮ অক্টোবর ফল ঘোষণা। উত্তর ভারতের ওই রাজ্যে বরাবরের মতো এবারও মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে জোর লড়াই শুরু হয়েছে। দুই দলেরই কিছু নেতা বিপুল ব্যবধানে দল ক্ষমতায় আসছে দাবি করে নিজেদের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তুলে ধরতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। দাবি পূরণে তাঁদের অনুগামীরা সামাজিক মাধ্যমে প্রচারে ঝড় তোলার পাশাপাশি পার্টি অফিসের সামনে বিক্ষোভ, নেতার বাড়ি ঘেরাও, কিছই বাকি রাখেনি।
মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি দখলের লড়াইকে ঘিরে আপাতত ময়দানে সক্রিয় দুই দলের পাঁচ মুখ। ফল বেরনোর পর সংখ্যাটা দ্বিগুণ হয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা বর্তমানে রাজ্যসভার সদস্য। একটি টিভি চ্যানেলকে রবিবার রণদীপ বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী হতে গেলে প্রথমেই বিধায়ক হওয়ার প্রয়োজন নেই। স্পষ্ট বলেছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির দাবিদার।
বিজেপির হয়ে রবিবার রাজ্যে প্রচারে গিয়েছিলেন কেন্দ্রের শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘হরিয়ানায় মুখ্যমন্ত্রী নায়ব সিং সরকারের কাজই দলের হাতিয়ার। অল্পদিনে তিনি নিজেকে দক্ষ মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন।’
৫৪ বছর বয়সি নায়ব সিংহ এ বছর ১২ মার্চ মনোহরলাল খট্টরের জায়গায় হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হন। তখনই ক্ষিপ্ত হয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেন প্রবীণ নেতা অনিল ভিজ। রবিবার ধর্মেন্দ্র প্রধান বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকেই কার্যত দলের মুখ্যমন্ত্রী মুখ ঘোষণা করায় অনিল ভিজের অনুগামীরা ক্ষোভ উগরে দেয়। হরিয়ানায় বিজেপির মধ্যে ধারণা ছিল খট্টরকে সরানো হলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন অনিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর অন্ধভক্ত ভিজের বদলে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি এগিয়ে দিয়েছেন নায়ব সিংকে।
গৃহ অশান্তিতে জেরবার কংগ্রেসও। দশ বছর দল ওই রাজ্যে ক্ষমতায় নেই। এবার দলের ক্ষমতায় ফেরার আভাস দিয়েছে একাধিক প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষা। ঘটনা হল, কংগ্রেসের পালে হাওয়া থাকলেও দল ওই রাজ্যে আপাতত তিন শিবিরে বিভক্ত। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিং হুড্ডা, কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা এবং কুমারী শৈলজা—রাজ্য কংগ্রেসের এই তিন হেভিওয়েট নেতা ক্ষমতার কুর্সি নিয়ে লড়াইয়ের আভাস দিয়ে রেখেছেন। সেই মতো তাঁদের অনুগামীরাও নিজেদের শিবির ভারী করতে ময়দানে সক্রিয়।
প্রাক্তন মুখ্যন্ত্রী হুড্ডা দীর্ঘদিন রাজ্যের জাঠ বলয়ে শক্তিশালী নেতা, যে সম্প্রদায়ের প্রায় ২৫ শতাংশ ভোট আছে। রোহতক, সোনীপত, ঝঞ্জর হল রাজ্যের জাঠ বহুল তিন লোকসভা কেন্দ্র। ৯০ আসনের বিধানসভার ২১টি আসন রয়েছে এই তিন এলাকায়। রোহতক থেকে লোকসভায় এবার জয়ী হয়েছেন হুড্ডার বড় ছেলে দীপেন্দ্র।
দিল্লির মতো রাজ্যেও সমান সক্রিয় হরিয়ানার প্রথমসারির রাজনীতিতে বলতে গেলে একমাত্র মুখ কুমারী শৈলজা। প্রবীণ এই কংগ্রেস নেত্রী লোকসভায় চারবার জিতেছেন। বর্তমান লোকসভার সদস্য শৈলজা ইউপিএ জমানায় মন্ত্রী ছিলেন। তিনি রাজ্যের অন্যতম ওবিসি মুখ। তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিও রাজ্য-রাজনীতির অন্যতম আলোচ্য।
অন্যদিকে, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা পারিবারিক পরিচয়ের পাশাপাশি নিজের নেতৃত্ব তৈরি করেছেন। হুড্ডা, শৈলজা এবং সুরজেওয়ালা—তিন নেতাই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য এবং রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ। প্রয়াত কংগ্রেস নেতা শামশোর সিং সুরজেওয়ালার পুত্র রণদীপ। শামশোর সিং কংগ্রেসের বিধায়ক ও সাংসদ ছিলেন। সুরজেওয়ালার রাজ্য-রাজনীতিতে বড় কৃতিত্ব তিনি দু’বার হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওম প্রকাশ চৌতালাকে বিধানসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী করেছেন।