শেষ আপডেট: 11th January 2024 11:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ৩০ বছর তিনি কথা বলেননি। ৩ দশকেরও বেশি সময় আগে যেদিন বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল, সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যতদিন না ওই জায়গায় রামলালার মূর্তি বসছে, ততদিন তিনি একটি কথাও বলবেন না। সেই প্রতিজ্ঞা তিনি রক্ষা করেছেন। ১৯৯২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত মৌনব্রত ভঙ্গ করেননি সরস্বতী দেবী। তবে এবার ভাঙবেন। আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় বহু প্রতীক্ষিত রাম মন্দিরের উদ্বোধন হবে, প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হবে রামলালার। সেদিন ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের নীরবতা ভেঙে কথা বলবেন তিনি।
৮৫ বছর বয়সি স্বরস্বতী দেবী ঝাড়খণ্ডের ধানবাদের কারমাতান্ড গ্রামের বাসিন্দা। ছোট থেকেই তিনি ভগবান রামের একনিষ্ঠ ভক্ত। কবে রামজন্মভূমিতে তাঁর মন্দির হবে, সেই অপেক্ষায় দিনের পর দিন কাটিয়ে ফেলেছেন। জীবনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় সেই অটল ভক্তি আর বিশ্বাসের কাছে নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন। তাই মৌনব্রত নিতে দুবার ভাবেননি।
তারপর তো সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায় এল। অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির কাজ শুরু হল। সেই খবর পেয়ে চোখে জল এসে গিয়েছিল অশীতিপর বৃদ্ধার। জানিয়েছিলেন, রাম মন্দিরের কাজ শেষ হলে এবং মন্দির প্রাঙ্গণে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরেই কথা বলবেন। অবশেষে সেই দিনক্ষণও জানিয়েছে মন্দির কমিটি। আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন। ৩ দশকের নীরবতা ভেঙে সেদিন কথা বলবেন সরস্বতী দেবী।
তবে তাঁর সম্পূর্ণ মৌনব্রত চলছে গত ৩ বছর ধরে। ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতিদিন দুপুরে ১ ঘন্টার জন্য কথা বলতেন তিনি। তবে যেদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্দিরের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, সেদিন থেকে আর একটিও শব্দ উচ্চারণ করেননি বৃদ্ধা। তবে শেষমেশ তাঁর মৌনব্রত ভঙ্গ করার সিদ্ধান্তে তাঁর পরিবার অত্যন্ত খুশি এবং উত্তেজিত। তাঁরা অধীর আগ্রহে সেই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছেন, যখন তারা বৃদ্ধার কণ্ঠস্বর শুনতে পাবেন।
সরস্বতী দেবীকে মানুষ মৌনী মা নামেই চেনেন। রাম মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে এবং তাঁর পুরো পরিবারকে ২২ তারিখ অযোধ্যায় মন্দিরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির থাকার জন্য বিষেশভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সরস্বতী দেবী মনের কথা প্রকাশ করার জন্য ব্যবহার করেন কাগজ। সেখানেই লিখে তিনি জানিয়েছেন, মৌনব্রতের মধ্যেই অযোধ্যা, কাশী, মথুরা, তিরুপতি বালাজি এবং বাবা বৈদ্যনাথ ধাম পরিদর্শন করে ফেলেছেন তিনি। রাম মন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে ডাক পাওয়াকে তিনি ভগবান রামের ডাক বলেই মনে করেন। মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য নরেন্দ্র মোদি এবং যোগী আদিত্যনাথের প্রশংসা করেছেন বৃদ্ধা। তাঁর কাছে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং 'দশরথ' এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ 'বশিষ্ঠ মুনি'। ২২ তারিখ রামের নাম করতে করতেই তিনি মৌনব্রত ভঙ্গ করবেন বলে জানিয়েছেন।