শেষ আপডেট: 24th September 2024 17:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: হিজবুল্লা নিকেশে লেবাননের উপর ইজরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার বিকেল (ভারতীয় সময়) পর্যন্ত অর্ধ শতাধিক শিশু, ৯৪ জন মহিলাসহ অন্তত ৫৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আকাশপথে বোমা ও রকেট হানায় জখম হয়েছেন নিদেনপক্ষে ১৮৩৫ জন। ৫৪টি হাসপাতালে তাঁদের চিকিৎসা চলছে। এরমধ্যেও মারাত্মক জখম হয়ে প্রচুর শিশু ভর্তি রয়েছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই তথ্য দিয়ে জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদিন হানাদারি চালায় ইজরায়েলি বাহিনী। অন্যদিকে, ইজরায়েলি হামলা রুখতে হিজবুল্লা গোষ্ঠীও পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছে। মূলত ইজরায়েলি বিমানঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায় তারা। এদিকে, ইজরায়েল-হিজবুল্লা সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলি। রাষ্ট্রসঙ্ঘ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির ডাক দিয়েছে দুপক্ষকেই।
জেরুজালেম পোস্ট ইজরায়েলি সেনাপ্রধান হের্জি হালেভিকে উদ্ধৃত করে লিখেছে, তাঁরা সব ইউনিটকে ময়দানে নামিয়ে আরও জোরদার আক্রমণ শানাতে চলেছেন। হালেভির কথায়, আমরা হিজবুল্লাকে ঘুমোতে দেব না। পূর্ণশক্তি প্রয়োগ করে দেবে বাহিনী। এই পরিস্থিতিতে হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইজরায়েল-লেবানন উত্তেজনা কমাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এদিন বলেন, শান্তি ফেরাতে সচেষ্ট বাইডেন।
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, দক্ষিণ লেবানন থেকে হাজার হাজার মানুষ ঘরদোর ছেড়ে পালাচ্ছেন। তাড়াহুড়োতে যে যা হাতের কাছে পাচ্ছেন, তাই নিয়ে পাততাড়ি গুটিয়ে বেইরুটের দিকে রওনা দিচ্ছেন। ইজরায়েলের এহেন আচরণকে আন্তর্জাতিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ বলে ব্যাখ্যা করেছে। তাদের মতে, লড়াই যাদের মধ্যেই হোক না কেন, গুনাগার দিতে হচ্ছে সাধারণ লেবাননিদের।
আল জাজিরার আরেক প্রতিনিধি বেইরুট থেকে লিখেছেন, স্থানীয় স্কুলগুলিতে ত্রাণ ও আশ্রয় শিবির খোলা হলেও সেখানে এখনই ঠাঁই নেই দশা। তিনি জানিয়েছেন, দুটি স্কুলে প্রায় ১২০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। যাদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। কোলের বাচ্চাও আছে প্রচুর। আরও দলে দলে মানুষ আসছে। ভিটেছাড়াদের জল ও বিদ্যুৎ পরিষেবা মিলছে। দেওয়া হয়েছে শোওয়ার বিছানা। স্কুলের রক্ষণাবেক্ষণকারীরা জানিয়েছেন, এই দুই স্কুলে আর কাউকে জায়গা দেওয়ার অবস্থা নেই।
এই অবস্থায় রাষ্ট্রনেতারা পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দুপক্ষকেই সতর্ক করে দিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ, আমেরিকা ছাড়াও হিজবুল্লার নেপথ্য পৃষ্ঠপোষক ইরান হুমকির সুরে ইজরায়েলকে পাল্টা জবাবের হুমকি দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাসৌদ পেজেশকিয়াঁ বলেন, আমরা শান্তি কায়েম রেখে বাঁচতে চাই। আমরা যুদ্ধ হোক এমনটা চাই না। কিন্তু ইজরায়েল এনিয়ে পুরোদস্তুর সংঘর্ষ হোক এমনটাই চাইছে। যদি আরব দুনিয়ায় পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ হয়, তাহলে তা কারও পক্ষেই মঙ্গলজনক হবে না। ইজরায়েলের হাতে লেবাননকে আরেকটি গাজা হতে দেব না আমরা।