শেষ আপডেট: 4th January 2025 12:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমেরিকার মডেল সেজে প্রতারণা ৭০০ মহিলাকে। সকলকে লেজে খেলিয়ে পুলিশের জালে দিল্লির যুবক। দিল্লি পুলিশে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
পেশায় উত্তরপ্রদেশের নয়ডার একটি সংস্থার নিয়োগ কর্মী। সকালে সেই কাজই মন দিয়ে করেন। তা দিয়ে সংসার দিব্য চলে যায় কিন্তু বাড়তি খরচ জোগাবে কে। আনন্দ-মজা, হই হুল্লোরের জন্য টাকার প্রয়োজন। তাই রাতে অন্য কাজ করতে শুরু করেন যুবক। সেই কাজের দৌলতেই আজ শ্রীঘরে তিনি।
দিনে নিয়োগ কর্মী, রাতে প্রতারক। দুই কাজ বেশ আনন্দেই সামলাচ্ছিলেন। সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। কেমনভাবে পাততেন প্রতারণার জাল? ব্রাজিলের এক মডেলের ছবি চুরি করে বাম্বেল ও স্ন্যাপচ্যাটে একটি করে প্রোফাইল বানান তিনি। তাতে একটি বিদেশি মোবাইল নম্বরও নথিভুক্ত করেন। যাতে কারও কোনও সন্দেহ না হয়। এবার সেই প্রোফাইল থেকে দেশের মহিলাদের মেসেজ ও চ্যাট।
একটু পুরনো হলেই মহিলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতেন তিনি। পুরোটাই ভার্চুয়ালি। ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর মহিলাদের থেকে ছবি-ভিডিও চাইতেন। সেই ছবি-ভিডিও দিয়েই পরে প্রতারণা করতেন।
কাদের টার্গেট করতেন তুষার সিং বিস্ত?
২৩ বছর বয়সি দিল্লির এই যুবক মূলত ১৮ থেকে ৩০ বছরের আশপাশের মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতেন। তারপর ছিপ ফেলতেন। সেই ছিপে এক-দুই নয় দেশের ৭০০ মহিলা ধরা দেন এবং প্রতারিত হন।
কীভাবে সামনে এল গোটা ঘটনা?
সম্প্রতি দিল্লির এক দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ার সঙ্গে তিনি ঠিক এই কাজই করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এভাবেই বন্ধুত্ব পাতান ও প্রেম করেন। শেষে ছবি-ভিডিও চেয়ে তার থেকে নিজের কাছে রাখেন। সময় এলে সেই দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করেন। দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ার থেকে টাকা চাইতে থাকেন ক্রমাগত। টাকা না দিলে সেই সব ভিডিও ও ছবি শেয়ার করার হুমকি দেন। প্রথমে দ্বিতীয় বর্ষের ওই পড়ুয়া কিছু টাকা দেন। কিন্তু পরে সেই চাহিদা বাড়তে শুরু করলে তিনি অনুরোধ করেন ছেড়ে দেওয়ার জন্য। পড়ুয়া তাই টাকাও নেই, এমনও জানান।
কিন্তু তাতে কী, পরিবারের লোকজন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করতে থাকেন তিনি। শেষে ওই পড়ুয়া পরিবারে বিষয়টি জানান ও পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
তদন্তে নেমে দিল্লির বাসিন্দা তুষার সিং-কে ধরে ফেলে পুলিশ। জানা যায়, তিনি একটি বড় সংস্থায় কর্মরত। বিবিএ পড়েছেন। বাবা গাড়ি চালান ও মা বাড়ি সামলান। একটি বোন রয়েছে। যিনি গুরুগ্রামে চাকরি করেন। নিজের সখ পূরণ করতে, এই কালো দুনিয়ায় প্রবেশ করেন তিনি। এমন বন্ধুত্ব পাতান যাতে মেয়েরা কার্যত প্রেমে পড়ে যান। তারপরই শিকার শুরু করেন।
তুষারের ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। একাধিক তথ্য মিলেছে তা থেকে। ভার্চুয়াল বিদেশের নম্বরও পাওয়া গিয়েছে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ১৩টি ক্রেডিট কার্ড মিলেছে। দুটি অ্যাকাউন্টে নজর রেখেছে পুলিশ। তার সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে।