শেষ আপডেট: 2nd January 2025 11:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অবশেষে মুক্তি! গ্যাস দুর্ঘটনার ৪০ বছর পর ভোপাল থেকে পুরোপুরি সরল বিষাক্ত বর্জ্য। বুধবার রাতে মোট ৩৩৭ টন কেমিক্যাল বর্জ্য ভোপাল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অল্প দিনের মধ্যেই তা নষ্ট করে দেওয়া হবে। ভোপাল থেকে প্রায় ২৫০ কিমি দূরে ইন্দোরের কাছে পিথমপুর নামের একটি জায়গায় সেই বর্জ্যকে নষ্ট করে ফেলার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে।
ভোপাল থেকে এই বিষাক্ত বর্জ্য সরিয়ে নিয়ে যাওয়া একেবারেই সহজ ছিল না। ১২টি 'লিক প্রুফ' এবং আগুন ধরবে না এমন কন্টেনারে এই বর্জ্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রত্যেক কন্টেনারে কমপক্ষে ৩০ টন বর্জ্য রয়েছে। ১০০ শ্রমিক এই বর্জ্য সরানোর কাজ করেছেন। তাঁদের সকলের ৩০ মিনিট করেই শিফট করতে হয়েছে সুরক্ষার জন্য। কারণ ওই কেমিক্যালের কাছে ৩০ মিনিটের বেশি থাকা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
এই বর্জ্য সরানো এবং তা নিয়ে যাওয়ার জন্য অন্তত ২০০ মিটার রেডিয়াস অঞ্চল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সাধারণ মানুষের জন্য। অন্তত ১ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল গোটা প্রক্রিয়ায় সুরক্ষা বজায় রাখতে। তারপর ১২টি কন্টেনার নিয়ে ২৫টি গাড়ির কনভয় ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার গতিতে পিথমপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এই টিমের মধ্যে ছিল ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, দমকল কর্মী, কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যরা।
এই বর্জ্যের কিছু অংশকে পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে পোড়ানোর সময় নির্গত ধোঁয়া নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যদিও প্রশাসন বলছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। নিরাপদভাবেই তা পোড়ানো হবে।
১৯৮৪ সালের ২ ও ৩ ডিসেম্বরের মধ্যবর্তী রাতে ঘটেছিল ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনা। কীটনাশক তৈরির কারখানা ইউনিয়ন কার্বাইড থেকে অতি বিষাক্ত গ্যাস মিথাইল আইসোসায়ানেট লিক করে মৃত্যু হয়েছিল ৫৪৭৯ জনের। চিরকালের মতো পঙ্গু ও অন্যান্য রোগভোগে পরবর্তীতে মৃত্যু হয় আরও কয়েক হাজার মানুষের। তারপর থেকে পরিত্যক্ত কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য সরানো নিয়ে প্রচুর কাঠখড় পুড়েছে। শেষে আদালতের হস্তক্ষেপে এখন বর্জ্য সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল ভোপাল থেকে।