বুধবার রাজধানীজুড়ে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত, তিন ঘণ্টা বৃষ্টি হয়। তাতেই ভেসে যায় একাংশ।
জলমগ্ন দিল্লির একাধিক এলাকা
শেষ আপডেট: 22 May 2025 00:03
দ্য ওয়াল ব্যুরো: প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে লণ্ডভণ্ড দিল্লি ও নয়ডা। বুধবার সন্ধেয় আচমকা প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হয়। যার জেরে বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে রাজধানীর একাংশ। ঝড়ের দাপটে বহু জায়গায় গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে বিশাল হোর্ডিংও। এদিন হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৭৯ কিলোমিটার। রাজধানীর লোধি রোড ফ্লাইওভারের কাছে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়ে এক পথচারীর ওপর, ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।
চল্লিশ মিনিটের ঝড়ে তছনছ অবস্থার রাজধানীর। জল জমে গেছে বহু এলাকায়। ট্র্যাফিক জ্যামে নাজেহাল নিত্যযাত্রীরা। ঝড়ের সময় লোধি রোড এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়, সেই সঙ্গে প্রবল দমকা হাওয়ায় ভয়ঙ্করভাবে দুলতে থাকে গাছপালা ও বিলবোর্ড। নয়েডায় একটি সাইনবোর্ড পড়ে যায় কিছু পার্ক করা মোটরসাইকেলের উপর। 'ওয়েলকাম টু নয়ডা' লেখা আরেকটি বোর্ডও ভেঙে পড়ে নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়েতে।
গ্রীষ্মের অসহ্য দাবদাহের মাঝেই এই প্রাক-মৌসুমি বৃষ্টি কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও শহরজুড়ে সৃষ্টি করে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির। আকস্মিক জলাবদ্ধতা দেখা যায় বহু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায়। অক্ষরধাম ফ্লাইওভার, সিকান্দ্রা রোড এবং আইটিও-র টিলক ব্রিজের নিচে জমে যায় জল। লক্ষ্মীনগর সিগনালের কাছে বিকাশ মার্গে একটি বিশাল বিলবোর্ড পড়ে গিয়ে ব্যাহত হয় যান চলাচল।
বুধবার রাজধানীজুড়ে বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত, তিন ঘণ্টা বৃষ্টি হয়। তাতেই ভেসে যায় একাংশ। দিল্লির সফদরজঙে ১২.২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে ময়ূর বিহারে পড়েছে ১৩ মিমি, এবং পিতমপুরায় হয়েছে ৫ মিমি বৃষ্টি। ঘণ্টায় ৭৯ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে। তীব্র ধুলিঝড় ও বৃষ্টির ফলে রাজধানীর তাপমাত্রা একধাক্কায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে ২৩ ডিগ্রিতে।
ব্যাহত হয়েছে বিমান পরিষেবা। শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত বাতিল হয়েছে একটি ফ্লাইট। দেরিতে ছাড়ছে আটটি ফ্লাইট। দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবহাওয়ার কারণে বিমান চলাচল বিঘ্নিত হতে পারে এবং যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়েছে ফ্লাইটে ওঠার আগে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিতে। এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো-সহ একাধিক বিমান সংস্থাও একই পরামর্শ দিয়েছে যাত্রীদের।
দিল্লি মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, ঝড়ের সময় কিছু জায়গায় লাইনে জিনিসপত্র পড়ে যাওয়ায় পরিষেবায় সমস্যা দেখা দিয়েছে।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, হরিয়ানা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে তৈরি হওয়া একটি সাইক্লোনিক সার্কুলেশন এবং পাঞ্জাব থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত একটি পূর্ব-পশ্চিম ঘূর্ণাবর্তের জন্য হঠাৎ এমন আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। এর সঙ্গে আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আসা জলীয় বাষ্প রয়েছে, ফলে তৈরি হয়েছে ঝড় শক্তি বাড়িয়েছে।
স্বস্তির বৃষ্টি দিলেও দিল্লি-নয়ডার এই ঝড় আবার প্রমাণ করল, প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য শহরের পরিকাঠামো এখনও কতটা অপ্রস্তুত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত সব কিছু স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।