সুমিত প্যাটেল জানান, 'আমরা কাজ ছাড়াও রাস্তায় বেরোই, এমন মনে করার আগে এনএইচএআই-র লোকেরা যদি একবার এই জ্যামে আটকে থাকতেন, তাহলে বোঝাতে পারতাম কী যন্ত্রণা!'
ছবি- গুগল
শেষ আপডেট: 2 July 2025 11:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর-দেওয়াস হাইওয়েতে ৪০ ঘণ্টার ভয়াবহ যানজটে (40-hour traffic jam) মৃত্যু হল অন্তত তিনজনের। জল গড়ায় আদালত পর্যন্ত। কিন্তু সেখানে 'দায় ঠেলা'র খেলায় নামল ন্যাশনাল হাইওয়েজ অথারিটি অফ ইন্ডিয়া (National Highways Authority of India)। সেই বিতর্কের আগুনে আরও ঘি ঢালল তাদেরই আইনজীবীর এক মন্তব্য, 'কাজ না থাকলে মানুষ এত সকালে রাস্তায় বেরোয় কেন?' এই মন্তব্যে ক্ষুব্ধ আদালতের বিচারপতি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এনএইচএআই-এর মন্তব্যকে 'নির্মম' বলেও দাবি করা হচ্ছে।
গত শুক্রবার ইন্দোর-দেওয়াস হাইওয়েতে দীর্ঘ যানজট (40-hour traffic jam in Madhya Pradesh) হয়, যা প্রায় ৮ কিমি রাস্তা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে, তাতে আটকে পড়ে প্রায় ৪ হাজার গাড়ি। প্রচণ্ড গরমে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ইন্দোরের কমল পঞ্চালের (৬২)। হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় শুজালপুরের বলরাম প্যাটেল (৫৫) এবং সন্দীপ প্যাটেলের (৩২)।
বলরামের এক আত্মীয় সুমিত প্যাটেল জানান, 'আমরা কাজ ছাড়াও রাস্তায় বেরোই, এমন মনে করার আগে এনএইচএআই-র লোকেরা যদি একবার এই জ্যামে আটকে থাকতেন, তাহলে বোঝাতে পারতাম কী যন্ত্রণা!'
দেওয়াসের আইনজীবী আনন্দ অধিকারী, যিনি নিজেও সেই যানজটে আটকে পড়েছিলেন, মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা (PIL) দায়ের করেন। বিচারপতি বিবেক রুশিয়া ও বিনোদ দ্বিবেদীর বেঞ্চ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে। আদালত এনএইচএআই-র দিল্লি ও ইন্দোর দফতর, পরিবহণ মন্ত্রক, ইন্দোর পুলিশ কমিশনার, জেলা শাসক, টোল কোম্পানি ও নির্মাণ সংস্থাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে।
বিচারপতিরা জানান, গত সেপ্টেম্বরেই ডাইভারশন রোড ৪ সপ্তাহে তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অথচ এখনও সেই রাস্তা অসম্পূর্ণ। এর উত্তরে এনএইচএআই জানায়, ‘ক্রাশার ইউনিট’ ধর্মঘটে ছিল, তাই দেরি হচ্ছে। কিন্তু আগে তো ৩-৪ মাস সময় চাওয়া হয়েছিল!'
'মানুষ কাজ ছাড়াও রাস্তায় বেরোয় কেন?' এনএইচএআই-র আইনজীবীর এই প্রশ্নে আদালত সাফ জানায়, 'এই যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। তাহলে কি মানুষ এখন থেকে রাস্তায় বেরোতে পারবে না? এটা কি কোনও নিরাপদ সমাজব্যবস্থার উদাহরণ?' ইন্দোরের কালেক্টর আশিস সিং জানান, এনএইচএআই যে সার্ভিস রোড তৈরি করেছিল, তা ভারী যানবাহনের চাপ সহ্য করতে না পেরে ভেঙে পড়ে। ফলে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়।
আদালত আগামী ৭ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। তার আগে সব পক্ষকে লিখিত জবাব জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।