শেষ আপডেট: 19th June 2024 16:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নাগাড়ে বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে অসমে। ইতিমধ্যে ৩০ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। পাশাপাশি একাধিক জায়গায় বহু মানুষ আটকে পড়েছেন। তার মূল কারণ ধস। রাজ্যের একাধিক জেলায় ভেসে গিয়েছে ঘরবাড়ি, সাধারণ মানুষের মাথা গোঁজার জায়গাটুকু নেই। এক কথায়, জনজীবন বিপর্যস্ত।
ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল' তাণ্ডব চালানোর পর থেকেই আরও পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে অসমের। আগামী কয়েকদিনে মৃতের সংখ্যাও যে বাড়তে পারে তার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। কারণ বিভিন্ন এলাকায় ধসের নীচে অনেক মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। এনডিআরএফ-এর দল উদ্ধারকাজ শুরু করেছে ঠিকই, তবে কতজনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হবে তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রবল বৃষ্টি এবং বন্যা পরিস্থিতিতে প্রায় ১,৪০০ হেক্টর চাষের জমি জলের তলায় চলে গেছে। কমপক্ষে ৩০,০০০ গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। কত বাড়ি, দোকানপাট ভেসে গেছে তার হিসেব এখনও করা সম্ভব হয়নি। অসম বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করিমগঞ্জ জেলা বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত ১ লক্ষের বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে আপাতত ৫ হাজার জনকেই আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে বরাক, কোপিলি ও কোশিয়ারা নদীর জল। বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের অন্তত ১০টি জেলা। বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায় থাকায় উদ্ধারকাজেও অসুবিধা হচ্ছে। তবে রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যৌথভাবে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। নলবাড়ি, তামূলপুর, উদলগুড়ি, দারাং, ধেমাজি সহ একাধিক এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
টানা বৃষ্টিতে সিকিমও সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। রাজ্যে যে আরও কয়েকদিন দুর্যোগ চলবে সেই পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে সিকিমে। তার জেরে একাধিক রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ধসের কারণে পর্যটকরা আটকে পড়েছেন। তবে মঙ্গলবার লাচুং থেকে প্রায় ১১৭৮ জন পর্যটককে উদ্ধার করেছে সিকিম প্রশাসন। কিন্তু এখনও আটকে রয়েছেন ৯১ জন। আবহাওয়া ঠিক থাকলে বুধবারের মধ্যে তাঁদেরকেও উদ্ধার করতে পারবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।
বিপর্যয়ের জেরে সিকিমের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সড়কপথের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়েছে। একাধিক জায়গায় বড় বড় পাথর ধসে পড়ায় রাস্তার বেশিরভাগ অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে আকাশপথে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।