শেষ আপডেট: 19th September 2024 11:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাত্র ২৬ বছর বয়সে 'কাজের চাপে' মারা গেলেন পুনের আন্তর্জাতিক পরামর্শদাতা সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই)-এর কর্মী! আনা সেবাস্তিয়ান পেরাইল নামের ওই কর্মী মাত্র চার মাস আগে ইওয়াই-এ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কাজে যোগ দেন। তাঁর মা অনিতা অগাস্টিন ইওয়াই ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান রাজীব মেমনিকে লেখা এক চিঠিতে দাবি করেছেন যে, কর্মক্ষেত্রে চাপের কারণেই তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
অনিতা অগাস্টিন তাঁর চিঠিতে লিখেছেন যে, প্রথম কাজের জায়গা ইওয়াই নিয়ে খুবই উত্তেজিত ছিলেন তাঁর মেয়ে। কিন্তু মাত্র চার মাস পরেই তাঁর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, আনা প্রায়ই রাত করে বাড়ি ফিরতেন অত্যন্ত ক্লান্ত অবস্থায়। উইকেন্ডের ছুটিতেও কাজ করতে হতো তাঁকে। একজন নতুন কর্মী হিসেবে তাঁকে 'অমানবিক পরিশ্রম' করতে হতো বলে দাবি মায়ের। সেই অতিরিক্ত কাজের চাপেই মেয়ে হাল ছেড়ে দেন বলে জানিয়েছেন মা।
শুধু তাই নয়, আনার মা তাঁর চিঠিতে বলেছেন, যে মেয়ের কর্মক্ষেত্র আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং থেকে কেউই তাঁর শেষকৃত্যে যোগ দিতে আসেননি। তিনি লিখেছেন, 'আনা খুব ভাল ছাত্রী ছিল। স্কুল এবং কলেজে সর্বোচ্চ নম্বর পেত। সম্মানের সঙ্গে সিএ পরীক্ষায় পাশ করে। ইওয়াই-তে সে নিরলসভাবে কাজ করেছে এবং দায়িত্ব পালন করার জন্য সে সবটুকু দিয়েছে। তবে, কাজের চাপ, অপরিচিত পরিবেশ এবং দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করায় তার শরীর ও মন ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়ে।'
তিনি জানান, আনা ১৯ মার্চ ইওয়াই পুনেতে যোগদান করেছিলেন। মাত্র চার মাস পরে ২০ জুলাই তার মৃত্যু হয়। তিনি উল্লেখ করেছেন, তাঁর মেয়ের সঙ্গেই কাজ করা কয়েকজন সহকর্মী অত্যধিক কাজের চাপে ইতিমধ্যেই ইস্তফা দিয়েছিলেন। কিন্তু আনার টিম লিডার তাঁকে ছাড়তে চাননি, বরং বলেন মানিয়ে নিতে।
অনিতা লিখেছেন, 'আমার মেয়ে বুঝতে পারেনি যে, মানিয়ে নেওয়ার জন্য তাঁকে জীবন দিয়ে দিতে হবে।' তাঁর আরও অভিযোগ, মেয়ের সংস্থা এবং সিনিয়র সহকর্মীরা একজন নতুন কর্মী হিসেবে মেয়েকে কোনও সহানুভূতি দেখাননি।
তিনি লেখেন, 'ইওয়াই-এর কেউ আনার অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দেয়নি। আমি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টাও করেছি, কিন্তু কোনও উত্তর পাইনি। যে সংস্থা মূল্যবোধ এবং মানবাধিকারের কথা বলে, তারা কীভাবে তাদের কর্মীর শেষকৃত্যে পর্যন্ত থাকে না!'
Heartbreaking news from EY Pune - a young CA succumbed to the work pressure and nobody from EY even attended her funeral - this is so appalling and nasty!!! pic.twitter.com/pt8ThUKiNR
— Malavika Rao (@kaay_rao) September 17, 2024
অগাস্টিন ওই চিঠিতে চেয়ারম্যানকে আরও বলেন, 'আনার মৃত্যুতে ইওয়াই-এর ঘুম ভাঙা উচিত। আমি আশা করি এই চিঠিটি আপনার কাছে যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে পৌঁছবে। আমার সন্তানের অভিজ্ঞতা প্রকৃত পরিবর্তন আনুক, যাতে অন্য কোনও পরিবারকে আমাদের মতো শোক এবং যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে না হয়।'