ছবিটি এআই দ্বারা নির্মিত (দ্য ওয়াল)
শেষ আপডেট: 11th March 2025 18:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের সেলিব্রেশন নিয়ে রক্তারক্তি কাণ্ড হয় মধ্যপ্রদেশের মৌতে। পাথর ছোড়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। মসজিদ চত্বর থেকে ওই পাথর ছোড়ার খবর পাওয়া যায়। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়,একাধিক দোকান ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। এই ঘটনায় নয় যুবকের মাথা কামিয়ে দিল পুলিশ। ঘটনায় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ১২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
নয় জনের মাথা কামানোর ঘটনা নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়েছে মধ্যপ্রদেশে। ভিড়ে মধ্যে শুধুমাত্র নয়জনকে চিহ্নিত করে এমন শাস্তি দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দিওয়াসের বিজেপির বিধায়ক। তিনি এসপি অফিসে গিয়ে পুলিশ সুপার পুনিত গেহলোদের সঙ্গে কথা বলেন। বিধায়ক গায়েত্রীরাজে পাওয়ারের দাবি, ওই যুবকদের কোনও ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই। হঠাৎ তাদের ধরে এভাবে অপদস্থ করার মানে কী। যদিও পুলিশের তরফে পরবর্তী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা জানা যায়নি।
রবিবার রাতে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে ভারত। ১২ বছর পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠে গোটা দেশ। আনন্দে মেতে ওঠেন মৌয়ের বাসিন্দারাও। তেরঙ্গা বিজয় মিছিলে শামিল হন আমজনতা। সেসময় কয়েকজনের হাতে গেরুয়া রঙের পতাকা ছিল বলে পুলিশের দাবি।
মিছিলটি জামা মসজিদ এলাকায় পৌঁছতেই ঝামেলা শুরু হয়। আচমকাই মিছিল লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয় মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে। হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। অ্যাডিশনাল সুপারইনটেন্ডেন্ট অফ পুলিশ রূপেশ দ্বিবেদী জানান, 'জয় শ্রীরাম', 'ভারত মাতার জয়' স্লোগান উঠতেই ঝামেলা শুরু হয়। সেই সময় মসজিদ থেকে রাতের প্রার্থনা সেরে লোকজন ফিরছিলেন।
মৌতে থাকা জামা মসজিদের ইনচার্জ মুফতি জাবিরের অবশ্য অভিযোগ, ভারত জিতেছে, সেই আনন্দ উদযাপন করতে গিয়ে একাংশ মসজিদের ভিতরে বাজি পোড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। তারপর আপত্তিকর মন্তব্য ও স্লোগানও তোলেন। সেই ভিড় থেকেই কেউ প্রথমে ইট ছোড়ে। ভিডিওতে দেখা গেছে সেটা। পুলিশের কাছে সেই ফুটেজ রয়েছে। তদন্ত চলছে।
তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মসজিদের ভিতরে বাজি ছোড়ার অভিযোগের কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি। তিনি বলেন, 'আমরা সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছি, তবে এখনও পর্যন্ত এই দাবি প্রমাণ করার মতো কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।'
তিনি আরও জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় মোট চারটি এফআইআর দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি দায়ের করেছেন চারজন জখম ব্যক্তি। দ্বিতীয়টি করেছেন এক সিন্ধি ব্যবসায়ী, যার দোকানে আগুন লাগানো হয়েছিল। তৃতীয় এফআইআরটি করেছেন দুই ব্যক্তি, যাদের মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর চার নম্বর এফআইআরটি সোমবার মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়।
এদিকে এই সংঘর্ষের ঘটনায় রাজনীতির রঙ লেগেছে। বিজেপি বিধায়ক উষা ঠাকুর সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, 'ছেলেপুলেরা ভারতের জয় উদযাপন করছিল, দেশবিরোধী মানসিকতার মানুষজন পাথর ছুড়তে শুরু করে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় পাথর ছোড়ার ঘটনাটি হয়। পর্যাপ্ত ভিডিও প্রমাণ রয়েছে এবং অভিযুক্তদের আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। এই ধরনের দেশবিরোধী মানসিকতা শেষ করা প্রয়োজন।'